সহবাসের পর জ্বলে কেন । মুক্তি পেতে যা করবেন
সহবাসের সময় যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া বর্তমান সময়ে অনেক মহিলাদের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। এর পেছনে বিভিন্ন শারীরিক এবং পারিপার্শ্বিক কারণ থাকতে পারে। যদি শারীরিক কোন সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। তার পূর্বে কিছু বিষয় আমাদের জানা উচিত যেগুলো অবলম্বন করলে সহবাসের পর জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া কখন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়
সাধারণত যে সকল নারীরা তাদের জীবনের কখনো কোন যৌন কার্যকলাপের সম্মুখীন হয়নি তাদের যোনি হাইম্যান পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে। এক্ষেত্রে প্রথমবার যৌন মিলনের সময় একটু জ্বালাপোড়া হতে পারে এবং ব্যথা লাগতে পারে। তবে এই ব্যথা এবং জ্বালা করা যদি অসহনীয় মাত্রায় চলে যায় তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
আবার দাম্পত্য জীবনে যদি কোন মহিলা সহবাসের পরবর্তী সময়ে কিংবা সহবাস চলাকালীন নিয়মিত যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া অনুভব করেন সে ক্ষেত্রেও তার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। পাশাপাশি নিচে উল্লেখিত পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করা উচিত।
সহবাসের পর জলে কেন
সহবাসের পর যৌনাঙ্গের বিভিন্ন কারণে জ্বালাপোড়া হতে পারে।
ইনফেকশন জনিত কারণে
অনেক সময় মহিলাদের ইনফেকশন জনিত কারণে সহবাসের পর জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে ভ্যাজাইনায় জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে থাকে। ফলে ভেতরে এক ধরনের ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং সহবাসের পর জ্বালাপোড়া শুরু হয়।
করণীয়ঃ যোনির ভেতরে ইনফেকশন হলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন।
ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস
যাদের সহবাসের সময় যোনি শুকিয়ে যায় তাদের ক্ষেত্রেও সহবাসের পরবর্তী সময়ে জ্বালা পোড়া হতে পারে। যোনি বিভিন্ন কারণে শুকিয়ে যেতে পারে । সুতরাং এ সমস্যা যদি নিয়মিত ঘটতে থাকে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
করণীয়ঃ সাময়িক সমাধান হিসেবে বিভিন্ন জেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
কনডম
জ্বালাপোড়ার আরেকটি কারণ হতে পারে কনডমের ব্যবহার। মানহীন কনডম ব্যবহার করলে তাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে লুব্রিক্যান্ট থাকে না। এতে করে শুষ্ক কনডম যোনির ভেতরে ঘর্ষণের সৃষ্টি করে এবং সেখান থেকে আঘাত পাওয়ার ফলে ব্যথার সৃষ্টি হয়।
করণীয়ঃ উন্নত মানের কনডম ব্যবহার করুন এবং কনডম সঠিকভাবে ব্যবহার করুন।।
কঠোর যৌনতা
সহবাস মূলত পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে শারীরিক মিলন হলেও এখানে মানসিক শান্তি মুখ্য হিসেবে কাজ করে। অনেকেই সহবাস করার সময় উগ্র মনোভাব দেখিয়ে থাকে যার ফলে সহবাস চলাকালীন অনেক সময় মহিলারা যোনির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়।
করণীয়ঃ যথাসম্ভব ভালোভাবে দুজনে একে অপরের সাথে মিলেমিশে সহবাস উপভোগ করুন।।
ফোর প্লে না করা
অনেকেই অতিরিক্ত উত্তেজনা কিংবা অজ্ঞতাবশত সহবাস এর পূর্বে সঙ্গিনীকে আদর না করেই লিঙ্গ যোনির ভেতরে প্রবেশ করান। এতে করে অনেক সময় মহিলাদের যোনির ভেতর থেকে লুব্রিক্যান্ট নিঃসরণ হয় না এবং সহবাসে মহিলাদের অনেকটা কষ্ট হয়ে যায়। এতে অভ্যন্তরে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হতে পারে।
করণীয়ঃ সহবাস করার পূর্বে সময় নিয়ে ফোরপ্লে করুন। কিভাবে সঠিক পদ্ধতিতে ফোরপ্লে করতে হয় সে সম্পর্কে আমাদের আরেকটি লেখা আছে। সেটি পড়ে নিতে পারেন এখান থেকে।
লিঙ্গের আকার
দাম্পত্য জীবনের শুরুতে সহবাসের পরে যৌনাঙ্গে ব্যাথার ক্ষেত্রে লিঙ্গের আকার অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ। স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে বয়সের পার্থক্য অনেক বেশি হলে কিংবা স্ত্রী বয়সে অনেক ছোট হলে অধিক বড় লিঙ্গের কারণে যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হতে পারে।
করণীয়ঃ এই অবস্থায় স্বামী এবং স্ত্রী দুজনে আলোচনা করুন এবং সহবাস করার পূর্বে পর্যাপ্ত পরিমাণে সময় নিয়ে ফোর প্লে করুন।
পিরিয়ড চলাকালীন সহবাস
পিরিয়ড চলাকালীন সহবাস করা যদিও একদম অনুচিত তবুও অনেকেই এই কাজটি করে থাকেন। পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে নারীদের যোনিতে ক্ষতের মত অনেক চাকার সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই অবস্থায় সহবাস করলে জ্বালাপোড়া করবেই
করণীয়ঃ পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে সহবাস থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর সহবাস
পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরপর যোনির ভেতরে এক ধরনের শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। এই সময়ে সহবাস করতে হলে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করুন।
করণীয়ঃ চাইলে বিভিন্ন লুব্রিকেন্ট জেল ব্যবহার করতে পারেন।
তলপেটে টিউমার
অনেক সময় জরায়ুর মুখে টিউমার এর কারণে সহবাসের পরে পেট ব্যথা কিংবা যোনির ভেতরে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়ে থাকে। যদি এমন কোন সমস্যার আচ পেয়ে থাকেন তবে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পরিশেষে এতোটুকুই বলবো যে দাম্পত্য ও যৌন জীবন সম্পর্কে বেশি বেশি জানুন এবং যে সকল পদ্ধতি অবলম্বন করলে যৌন জীবন সুখময় ও সমস্যাহীন ভাবে গড়ে উঠবে সেগুলো অনুসরণ করুন। এ সম্পর্কে আরো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে প্রশ্ন করতে পারেন এখানে।