কনডম ব্যবহারের নিয়ম সুবিধা ও অসুবিধা।
আমরা কমবেশি সবাই কনডম ব্যবহারের নিয়ম জানতে চাই। কিন্তু কোথায় থেকে জানবো সেটা খুঁজে পাই না। কারণ আমাদের দেশে যৌন সংক্রান্ত বিষয়গুলো গোপনে আলোচনা করা হয় এবং ট্যাবু হিসেবে চিহ্নিত। এ কারণে এগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা কিংবা জানতে চাওয়া সমাজে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তাই আপনিও যদি এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে থাকেন তবে এই লেখার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই জানতে পারবেন কনডম ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ কোন পিল সবচেয়ে ভালো? জন্মবিরতিকরণ পিল।
কনডম কি?
কনডম হলো এক ধরনের ব্যবহার্য বস্তু যা সাধারণত বিবাহ পরবর্তী সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ ও যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। কনডম সাধারণত পুরুষরা তাদের যৌনাঙ্গে পড়ে থাকেন। কিন্তু আজকাল ফিমেল কনডম এর ব্যবহার ও দেখা যায়।
কনডম কেন ব্যবহার করা হয়?
জন্মনিয়ন্ত্রণ করাই হচ্ছে কনডম ব্যবহারের অন্যতম উদ্দেশ্য। তবে বর্তমানে জন্মনিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিভিন্ন যৌনবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতেও কনডম অনেক বেশি সহায়তা করে। তাছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যান্য পদ্ধতি গুলো শরীরে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে কনডম ব্যবহার সম্পূর্ণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিহীন।
কনডম ব্যবহারের নিয়ম
কনডম হলো সবচেয়ে নিরাপদ এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। তবে সঠিক নিয়মে কনডম ব্যবহার না করলে ঝুঁকি বাড়তে পারে। কনডম ব্যবহার করার পরেও আক্রান্ত হতে পারেন বিভিন্ন যৌন রোগে এবং হঠাৎ করেই গর্ভে সন্তান চলে আসতে পারে। সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার করতে নিচের নির্দেশনা গুলি মেনে চলুন-
আরো পড়ুনঃ কোন কনডম সবচেয়ে ভালো?
- প্রথমে কনডমের প্যাকেটের যে কোন এক দিকে ধরে ভালোভাবে প্যাকেট খুলে ফেলুন। কনডমের প্যাকেট দাঁত দিয়ে কাটতে যাবেন না কিংবা মাঝ বরাবর প্যাকেট ছিড়বেন না। এক্ষেত্রে প্যাকেটের ভেতরে থাকা কনডম ছিড়ে যেতে পারে।
- প্যাকেটের ভেতর থেকে বের করার পর লক্ষ করুন যে কনডমটি কোন দিক থেকে ঘুরিয়ে খুলতে হবে। এটি সঠিকভাবে বুঝতে না পারলে সহবাসের সময় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হতে পারে। এক্ষেত্রে লুব্রিকেন্ট দিয়ে পিচ্ছিল করা দিক ভেতরের দিকে চলে গেলে মহিলাদের যোনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- পিচ্ছিল দিকটি নির্ণয় করে এক হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে কনডমের মাথায় হালকা করে ধরুন এবং আরেক হাত দিয়ে রাবারের মোড়ানো অংশটি লিঙ্গ বরাবর স্থাপন করুন।
- এরপর আস্তে আস্তে রাবারে মোড়ানো দিক লিঙ্গের বরাবর পেছনের দিকে রোল করুন। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে যে কনডমের মাথায় ফাঁকাস্থানে যেন কোন বাতাস ঢুকে না থাকে। বাতাস ঢুকে থাকলে সহবাসের সময় কনডম ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- গোপনাঙ্গে কনডম পরানো হয়ে গেলে এবার আস্তে আস্তে তা আপনার সঙ্গিনের গোপনাঙ্গে প্রবেশ করান।
- মনে রাখতে হবে যে গোপনাঙ্গ উত্তেজিত না হওয়া পর্যন্ত কখনো কনডম পড়তে যাবেন না।
- মিলন শেষ হলে পারতপক্ষে লিঙ্গ উত্তেজিত অবস্থায় কনডমসহ বের করে আনুন। অন্যথায় বিব্রত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। লিঙ্গ বের করে আনার সময় লিঙ্গের গোড়ায় কনডমের রাবার হাত দিয়ে চেপে ধরুন যাতে লিঙ্গ থেকে কনডম খুলে না যায়।
- এরপর টয়লেটে গিয়ে কনডম খুলে ফেলে দিন এবং গোপনাঙ্গ পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
আরো পড়ুনঃ ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম
আরো পড়ুনঃ সেক্সে রসুনের উপকারিতা কি?
কনডম ব্যবহারের সুবিধা
সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার করলে নানাবিধ সুবিধা পাওয়া যায়। প্রথমত আপনি সবচেয়ে নিরাপদ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করার পাশাপাশি যৌনবাহিত রোগের সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারছেন। তাছাড়া যাদের ইরেক্টাল ডিসফাংশন বা দ্রুত বীর্যপাতের সমস্যা থাকে তাদের ক্ষেত্রে বীর্যপাত দেরিতে হতে কনডম সহায়তা করে।
অসুবিধা
কনডম ব্যবহারে তেমন কোন অসুবিধা এখন পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি। তবে এটি ব্যবহারের ফলে লিঙ্গের ওপর একটা আবরণ করে বলে সহবাসের আসল স্বাদ অনেকেই অনুভব করতে পারেন না। তাছাড়া কনডমে ব্যবহৃত লুব্রিকেন্ট এর কারণে অনেকের এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়।
শেষ কথা
যতগুলো জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি পদ্ধতি হলো কনডমের ব্যবহার। এটি নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী। অন্য কোন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আপনাকে যৌন রোগ থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করবে না যেখানে কনডম ১০০% কার্যকরী। তবে কনডম ফেটে গিয়ে অনেক সময় এর কার্যকারিতা হারাতে পারে। তাই অবশ্যই উপরে উল্লেখিত কনডম ব্যবহারের নিয়ম গুলো সঠিকভাবে মেনে চলুন।