সহবাসের পর রক্তক্ষরণ কেন হয়
সহবাসের পর রক্তক্ষরণ কেন হয় এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে অনেকেই শুধুমাত্র রক্তকরণ বন্ধের ঔষধ সেবনকেই সমাধান হিসেবে দেখে থাকেন। কিন্তু জেনে রাখা উচিত যে সহবাসের পর রক্তক্ষরণ সাধারণ কোন বিষয় নয়। যোনির ভিতরে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এবং পিরিয়ড জনিত কারণে অনেক সময় সহবাসের পর রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে।
চলুন জেনে নেই যে সহবাসের পরে কখন রক্তক্ষরণ হলে সেটা স্বাভাবিক হবে আর কখন রপ্ত করণ হলে আপনাকে ডাক্তার দেখাতে হবে সে সম্পর্কে।
সহবাসের পর রক্তক্ষরণ কেন হয়
যোনির অভ্যন্তরে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়াঃ মহিলারা অনেক সময় সহবাস কিংবা যৌন কার্য সম্পাদনের সময় দুর্ঘটনা বসত যোনির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে সহবাসের পরে হালকা রক্ত আসতে পারে। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
যোনির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে বিভিন্নভাবে। যেমন সহবাস করার সময় যদি যোনি একেবারে শুষ্ক হয়ে যায় এবং কন্টিনিউয়াসলি আপনি সহবাস করতে থাকেন সেক্ষেত্রে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অনেকে সহবাসে থুথু ব্যবহার করে থাকেন। এটা নিরাপদ কি না এসম্পর্কে একটি লেখা রয়েছে। আবার সহবাসে আপনার সঙ্গীর উগ্র মনোভাব আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।
হাইম্যান প্রসারিত হওয়াঃ হাইমেন এক ধরনের পাতলা টিস্যু বা পর্দা যেটা ভ্যাজাইনা এর শুরুর দিকে জনিকে আবৃত করে রাখে। যখন সহবাস কিংবা যৌন কার্য করার ফলে এটি ছিড়ে যায় তখন রক্তক্ষরণ হতে পারে যা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। এই বিষয়গুলো সাধারণত দেখা যায় সে সকল নারীদের ক্ষেত্রে যারা কখনো কোন ধরনের যৌন কার্য কিংবা সহবাসে নিজেকে যুক্ত করেন নি। এক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা সাধারণত দেখা যায় না।
পিরিয়ড জনিত সমস্যাঃ পিরিয়ড চলাকালীন সময় ব্যতীত অন্যান্য সময় অনেক নারীদের রক্তক্ষরণ হতে দেখা যায়। এই রক্তক্ষরণ সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক একটি ঘটনা। সহবাসের পরে কিংবা সহবাস ছাড়াই যদি এরকমটা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই ধরনের রক্তক্ষরণ সাধারণত অন্যান্য যৌন সমস্যার সংকেত প্রদান করে থাকে।
জীবাণুর সংক্রমণ বা ইনফেকশনঃ এছাড়াও যদি আপনি যৌনবাহিত কোন রোগে সংক্রমিত হয়ে থাকেন তবে সহবাসের পরে রক্তপাত এর মত ঘটনা ঘটতে পারে। যেমন সার্ভিসাইটিস হল আপনার সার্ভিক্সের প্রদাহ। আপনার সার্ভিক্স যদি কোনভাবে উত্তেজিত বা আঘাতপ্রাপ্ত হয় তবে রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে বিশেষ করে সহবাসের পরে।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত
সাধারণত যদি রক্তক্ষরণ দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বন্ধ না হয় তবে যত দ্রুত সম্ভব আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়াও যদি সহবাসের পরে হালকা রক্ত ক্ষরণের সাথে আপনি তীব্র ব্যথা অনুভব করেন তবেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জরুরী।
পাশাপাশি এ ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলে কিছুদিনের জন্য আপনার সহবাস বন্ধ রাখুন এবং নিজেকে সুস্থ করে নিন। সংক্রমিত অবস্থায় সহবাস চলমান থাকলে রোগের বিস্তৃতি আরো বাড়তে পারে।
সহবাসের পর রক্তক্ষরণ প্রতিরোধে করণীয়
বেশিরভাগ রক্তক্ষরণ সহবাসের পরে হয়ে থাকে সাধারণত ইনফেকশন জনিত কারণে এবং আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে। সুতরাং আপনার সঙ্গী যখন কনডম ব্যবহার করবে তখন অবশ্যই দুজনে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নেবেন অথবা গ্লোভ ব্যবহার করবেন। এতে করে হাত থেকে ব্যাকটেরিয়া কনডমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। এমনকি অনেকে যোনিতে হাত ব্যবহার করে থাকেন যার পূর্বে অবশ্যই হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
আশা করি প্রথম সহবাসের পর রক্তক্ষরণ হলে করনীয়, সহবাসের পর রক্তক্ষরণ কেন হয় এবং এর থেকে কিভাবে মুক্ত থাকা যায় সে সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়েছেন। ভালো লাগলে লেখাটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
উৎসঃ
- Chlamydia [Fact sheet]. (2017).
cdc.gov/std/chlamydia/stdfact-chlamydia.htm - Mayo Clinic Staff. (2018). Vaginal bleeding. https://www.mayoclinic.org/symptoms/vaginal-bleeding/basics/definition/sym-20050756