গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ?
গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ সে ব্যাপারে প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলার জানা অত্যন্ত জরুরী। কারণ অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং গর্ভের সন্তানের জন্য ছোটখাটো কিছু ভুল বড় ধরনের বিপদ বয়ে আনতে পারে। সুতরাং বিপদে পড়ার পূর্বেই চলুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ এবং সহবাস করার নিয়ম সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় সহবাস করা যাবে কি
অনেকে মনে করে থাকেন যে শুরুর দিকে গর্ভাবস্থায় সহবাস নিরাপদ হলেও শেষের তিন মাস অনিরাপদ সময়। কিন্তু এ ধারণাটি সঠিক নয়। তবে এ সময় সহবাস করার ক্ষেত্রে শারীরিক জটিলতা ও গর্ভাবস্থার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত। যদি এ ধরনের কোনো সমস্যা না থাকে তবে কোন ঝুকি ছাড়াই আপনি গর্ভাবস্থায় সহবাস করতে পারবেন। কিন্তু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
কখন গর্ভাবস্থায় সহবাস এড়িয়ে চলা উচিত
স্বাস্থ্য জটিলতা এবং গর্ভজনিত কোন সমস্যা না থাকলে সাধারণত সহবাসে তেমন কোনো সমস্যা পরিলক্ষিত হয় না। তবুও চিকিৎসকরা কিছু ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় সহবাস থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সেগুলো হলো
- যদি গর্ভবতী মহিলার জরায়ুর মুখে কোন জটিলতা থাকে।
- অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কোনো কারণে মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হলে।
- পূর্ববর্তী গর্ভকালীন সময়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান প্রসব করে থাকলে।
- একই সময়ে দুই বা তার বেশি সন্তান ধারণ করে থাকলে।
- যদি কোন কারণে গর্ভফুল নিচে নেমে এসে রক্ত জমাট বাঁধে।
- পূর্বে কখনো গর্ভপাত করে থাকলে।
- এবং অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ভূগলে।
গর্ভাবস্থায় সহবাস করার নিয়ম
শারীরিক কোনো সমস্যা না থাকলে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সহবাস করা নিরাপদ হলেও সঠিক পজিশন না মানার ফলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তাছাড়া এ সময় কিছু পজিশন রয়েছে যেগুলোতে সবাই স্বাচ্ছন্দ বোধ করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উচিত বিভিন্ন পদ্ধতি এবং পজিশন অবলম্বন করা। তবে মাথায় রাখতে হবে গর্ভের সন্তান যেন কোনোভাবেই আঘাতপ্রাপ্ত না হয়।
গর্ভাবস্থায় সহবাসের সময় আপনার সঙ্গিনীর শরীর এবং পেট অত্যন্ত ভারী হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সঙ্গিনীকে ওপরে রেখে সহবাস করতে গেলে অস্বস্তি বোধ হতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত নড়াচড়ার ফলে শরীরে ব্যথা অনুভব হতে পারে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যেকোনো এক কাত হয়ে সহবাস করে দেখতে পারেন। তবে সবচেয়ে কার্যকরী এবং সহজ পদ্ধতি হলো সঙ্গিনীর পেছনে অবস্থান করে সহবাস করা। সেটা হতে পারে কাত হয়ে শুয়ে কিংবা হাটু গেড়ে।
তবে হাঁটু গেড়ে সহবাসের সময় অবশ্যই হাটুর নিচে নরম কম্বল কিংবা বালিশ ব্যবহার করতে ভুলবেন না। অন্যথায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থেকে যায়। আবার এ সময় পুরুষাঙ্গ যোনির অত্যন্ত গভীরে প্রবেশ করলেও অসস্থি লাগতে পারে। সুতরাং এই ব্যপারগুলো নিজেরা নিজেদের মত করে সাজিয়ে নিতে পারেন যে কিভাবে সহবাস করলে আপনারা দুজনেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।
আরো পড়ূনঃ মেয়েদের অতিরিক্ত সাদা স্রাব বন্ধ করার উপায়
গর্ভাবস্থায় সহবাস করার উপকারিতা
অন্তঃসত্ত্বা কালীন অনেক সময় স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েরই সহবাসের প্রবণতা অনেকাংশে কমে যায়। তবে সঠিক উপায়ে গর্ভাবস্থায় সহবাস করলে শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে শান্তি পাওয়া যায়। এতে করে গর্ভবতী মা স্ট্রেস মুক্ত থাকতে পারেন। আর চাপমুক্ত থাকা গর্ভের সন্তানের জন্য অত্যন্ত জরুরী। সুতরাং এসময় নিয়ম মেনে গর্ভাবস্থায় সহবাস করা উচিত।
যেহেতু গর্ভবতী মা এবং গর্ভের শিশুর জন্য গর্ভকালীন সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সে ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি সহবাসের দিকেও নজর দিতে হবে। এতে করে গর্ভবতী মা এবং শিশু উভয় সুস্থ থাকবে। আপনাদের যদি এ সম্পর্কে আরো কোন কিছু জানার থাকে তবে নিশ্চয়ই আমাদেরকে প্রশ্ন করতে ভুলবেন না।