দ্রুত ওজন কমানোর উপায় ডায়েট | কিটো ডায়েট
বেশ কিছুদিন ধরেই পৃথিবীজুড়ে কিটো ডায়েটের জয়জয়কার। দ্রুত ওজন কমানোর জন্য কিটো ডায়েট বিখ্যাত। তবে অনেকেই এর ভালো-মন্দ দিকগুলোর ফল না জেনেই ডায়েট শুরু করে দিচ্ছেন। যে কারণে অনেকেই আশানুরূপ ফল পাচ্ছেন না। আসুন জেনে নেই কিটো ডায়েট সম্পর্কে।
আমাদের প্রতিদিনের এনার্জি বা শক্তি আসে মূলত শর্করা থেকে। শর্করা ভেঙে গ্লুকোজ হয়,সেই গ্লুকোজ কোষে কোষে প্রবেশ করে ক্রেবস চক্রের মাধ্যমে এটিপি তৈরি করে।এই এটিপিই হচ্ছে আমাদের জীবনের জ্বালানি বা ফুয়েল। কিটো ডায়েটে ব্যাপারটিকে উল্টে দেয়া হয়। এটি জ্বালানি বা ফুয়েলের উৎস হিসাবে শর্করা নয়,দেহে সঞ্চিত ফ্যাট বা চর্বি ব্যবহার করে। ফ্যাট ক্রেবস চক্রে প্রবেশ করে না। এটি যকৃতে ভেঙ্গে ফ্রি ফ্যাটি এসিড তৈরি করে। কিন্তু একটা বড় অংশ কিটো এসিডে পরিণত হয়। একে বলে কিটো জেনেসিস। তিন ধরনের কিটোন আছে আমাদের শরীরে। এসিটোন,এসিটো এসিটিক এসিড এবং বিটা হাইড্রক্সি বিউটারিক এসিড। এই তিনটিই শক্তিশালী এসিড বা অম্ল। কিটো ডায়েট যারা করেন, তাদের শরীরে ফ্যাট ভাঙতে থাকে আর তৈরি হতে থাকে প্রচুর কিটো এসিড। ফলে দ্রুত ওজন কমতে থাকে। কমতে থাকে শরীরের চর্বি।
আরও পড়ুনঃ ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায় গুলো জেনে নিন
ওজন কমানোর উপায় ডায়েট
কিভাবে কিটো ডায়েট করতে হয়?
১. কিটো ডায়েটে খাদ্যতালিকা থেকে শর্করা জাতীয় খাবার একদম বাদ দেয়া হয়। মানে এ ডায়েট শুরু করলে আপনার ভাত এবং রুটিকে গুডবাই বলে দিতে হবে।
২. আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে মাঝারি মাত্রায়। এর মানে আগে দুই বেলা আমিষ খেলে এখন খেতে হবে একবেলা। অথবা একবেলার প্রোটিন ভাগ করে খেতে হবে দুইবেলায়।
৩. আপনি যদি প্রতিদিন দুই হাজার ক্যালরি খাবার খান,তবে ফ্যাট খাবেন ১৬৫ গ্রাম,প্রোটিন ৭৫ গ্রাম এবং শর্করা মাত্র ৪০ গ্রাম। যা সাধারন খাদ্য তালিকার সম্পুর্ণ বিপরীত। বিস্তারিত বললে আপনি ভাত,রুটি বা শস্যজাতীয় খাবার বাদ দিবেন।
৪. তৈলাক্ত খাবার,ঘি,মাখন ইত্যাদি বেশি খাবেন। অল্প পরিমানে খাবেন গরু,খাসি এবং মুরগির মাংস। প্রচুর সবুজ শাকসবজি খাবেন কিন্তু শর্করাযুক্ত ফলমূল খেতে পারবেন না।
৫. চিনি বা মিষ্টিজাতীয় কোন কিছু একদম বাদ। কোক, ফলের জুস, কেক, আইসক্রিম, চকোলেট, স্মুদি, যেকোন ধরনের মিষ্টি।
আরও পড়ুনঃ ইরেকটাইল ডিসফাংশন থেকে মুক্তির উপায়
যেহেতু কিটো ডায়েট করলে শরীরে শক্তির উৎস হিসাবে ফ্যাট ভাঙতে বাধ্য হয়,সে জন্য এতে দ্রুত ওজন কমে। শর্করা না খাওয়ার কারণে ইনসুলিন নিঃসরণের প্রয়োজন হয়না,প্যানক্রিয়াস ইনসুলিন তৈরি কমিয়ে দেয়। রক্তে গ্লুকোজ কমতে থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
কিটো ডায়েট চার্ট জাহাঙ্গীর কবির
কিটোজেনিক ডায়েট হল সুপার লো-কার্ব ডায়েট। এই ডায়েটে কার্ব এক্সট্রিম (extreme) লেভেলে কম থাকবে আর ফ্যাট অনেক হাই থাকবে আর প্রোটিন মিড লেভেলে (mid level) থাকবে। আমাদের নরমাল ডায়েটে ৫০% কার্বোহাইড্রেট থাকে, ২০% প্রোটিন আর ৩০% ফ্যাট থাকে। টিপিক্যাল কিটোজেনিক ডায়েটে টোটাল ক্যালোরিক নিডের কার্ব ৫%, প্রোটিন ২৫% আর ফ্যাট থাকে ৭০%। মানে আপনি সারাদিন যতটা খাবার খাবেন তার মধ্যে খাবারের পার্সেন্টেজ এমন হবে। এ জন্য আপনাকে জানতে হবে কোন কোন খাবারে কী পরিমাণ কার্ব, প্রোটিন, ফ্যাট ইত্যাদি থাকে।
আপাতত মোটেও খাওয়া যাবে না যে খাবারঃ
১) চালের তৈরি সব কিছু ( ভাত, চাউলের রুটি, চাল দিয়ে বানানো দ্রব্যাদি)।
২) গমের তৈরি সব কিছু (রুটি, পাওরুটি, বিস্কুট যে কোন প্রকার, গম দিয়ে বানানো অন্যান্য দ্রবাদি)
৩) কোন প্রকার ডাল খাওয়া যাবে না
৪) আলু, মিষ্টি আলু, গাছ আলু বা আলু সাদৃশ্য অন্যান্য আলু, যা শর্করা জাতীয় সবজি যেমন: মূলা।
৫) এছাড়া চিনি এবং চিনি দিয়ে বানানো দ্রব্যাদি পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা খাওয়া যাবে না।
৬) দই, টক দই, দুধ এবং সরাসরি দুধ দিয়ে বানানো দ্রবাদি।
৭) মধু এবং মিষ্টি ফলমূল খাওয়া যাবে না। কেন খাওয়া যাবেনা সেটা পরে ব্যাখ্যা করছি।
৮) সয়াবিন তৈল, সূর্য মুখী তেল, রাইস ব্যান ওয়েল, ক্যানোলা ওয়েল, এবং সাধারণ কোন তেলে রান্না করা কিছু খাওয়া যাবে না।
৯) ফার্মের মুরগি, যে মুরগিগুলো টেনারির বর্জ্য থেকে উৎপাদিত খাদ্য খাওয়ানো হয়, সয়া খাওয়ানো হয়।
১০) গরুর মাংস, যে গরু বা ষাঁড় গুলো ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মোটা তাজা করা হয়। খাসির ব্যাপারেও একই কথা।
আরও পড়ুনঃ হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর দিক এবং এর থেকে মুক্তির উপায়।
যে খাবার গুলো খেতে বাঁধা নেইঃ
১) সবুজ শাক, সবজি৷ (গাজর, কচি সবুজ মিষ্টি কুমড়া খেলে অল্প পরিমাণ)
২) টক জাতীয় ফল। যেমন, জলপাই, আমলকী, একটি কচি ডাবের পানি।
৩) মাছ, যে কোন প্রকার খেতে পারবেন৷ তবে তৈলাক্ত দেশিয় মাছের ভেতর পাংকাশ, বোয়াল, ইলিশ সরপুঁটি, ব্রীগেড, গ্রাসকার্প, বাইম মাছ উত্তম৷ তৈলাক্ত বা সাগরের মাছ হলে আরো ভালো।
৪) গরু এবং খাসির মাংস খাওয়া যাবে তবে তা হতে হবে ইঞ্জেকশান মুক্ত এবং ঘাস, লতা পাতা বা খড় কুটো খেয়ে লালিত পালিত৷ তবে বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না।
৫) গরু, বা খাসির পায়া খাওয়া যাবে। যেটা খাওয়া এই সময়ে খুবই উপকারী৷ এটাও অল্প পরিমানে খেতে হবে।
৬) মুরগির ডিম খেতে পারবেন৷ ফার্ম হলে সমস্যা নেই, তবে ওমেগা ৩ বা দেশি মুরগি বা হাস হলে বেশী ভালো।
৭) মাছের ডিমও খেতে চেষ্টা করবেন যথা সম্ভব।
৮) ঘি, অর্গানিক বাটার, এক্সট্রা ভার্জিন ওলিভ অয়েল, MCT ওয়েল, অর্গানিক Extra virgin cold pressed কোকোনাট ওয়েল৷ এগুলো সব ভাল শপে পাওয়া যায়, তবে নিজে তৈরী করাটাই শ্রেয়।
৯) যে কোন প্রকার বাদাম। চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, অন্যান্য বাদাম যা আছে৷ চাইলে বাদাম ব্লেন্ড করে সাথে উপরে উল্লেখিত নারকেল তেল দিয়ে বানাতে পারেন পিনাট বাটার৷ যেটা খেতে তুলনাহীন৷ তবে খাবেন অল্প পরিমাণে।
১০) রং চা বা কফি খেতে পারেন দুধ চিনি ছাড়া। গ্রীণ টি এর সাথে লেবু, আদা, সামান্য লবন মেশাতে পারেন। কফির সাথে, MCT ওয়েল, মাখন বা ঘি, এবং অর্গানিক কোকোনাট অয়েল মিশিয়ে বাটার কফি বানিয়ে খেতে পারেন৷ এতে ভালো কাজ হবে।
কীভাবে ডায়েট শুরু করবেন–
> সকালের নাস্তা:
১) যাদের সকালে খাওয়ার অভ্যাস তারা আটটা বা সাড়ে আটটার দিকে দুধ চিনি ছাড়া এক কাপ চা খেতে পারেন। চায়ের মধ্যে যা দেবেন, আদা, লেবু, সামান্য লবণ।
২) অ্যাপেল সিডার ভিনেগার বা কোকনাট ভিনেগার খেতে পারেন কুসুম গরম পানির সাথে।
৩) এবং কুসুম গরম পানির সাথে লেবু চিপে খেতে পারেন।
সকাল আটটায় নাস্তা খেলে দেড়টার ভেতর দুপুরের খাবার খেতে হবে। এছাড়া যাদের দেরিতে নাস্তা খাওয়ার অভ্যাস তারা এগারোটার দিকে উপরোক্ত পদ্ধতিতে নাস্তা করবেন এবং দুপুরের খাবার আড়াইটা তিনটায় খাবেন।
> দুপুরের খাবারঃ
১) দুপুরের খাওয়ার আগে অবশ্যই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এক চামচ এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খাবেন। এতে আপনার গ্যাসের সমস্যা হবে না এবং চর্বি কাটতে সাহায্য করবে।
২) দুপুরের খাবারের ম্যানুতে শাক, সবজি, মাছ অথবা মাংস , ঘি এ ভাজা ডিম, ঘি’য়ে ভাজা বাদাম সাথে বাটার রাখতে পারেন এবং অবশ্যই টমেটো, গাজরসহ শসা বা শসার সালাদ রাখবেন।
আরও পড়ুনঃ স্বপ্নদোষ কি ও কেন হয়? স্বপ্নদোষ বন্ধ করার উপায়।
৩) শাক, সবজি অবশ্যই এক্সট্রা ভার্জিন ওলিভয়েল দিয়ে রান্না করবেন। মাছ ভাজলে (ডীপ ফ্রাই থেকে বিরত থাকবেন এতে খাদ্যগুন নস্ট হয়) বা রান্না করলে এই তেল দিয়েই করবেন। সবজি যতটুকু সম্ভব কম সেদ্ধ করবেন। যেন সবজির গুণগত মান ঠিক থাকে।
৪) ডিম কুসুম সহ ঘি বা মাখন দিয়ে ভেজে খাবেন। এক দিনে সর্বোচ্চ ছয়টা ডিম কুসুম সহ খেতে পারবেন কোন সমস্যা নেই। কারণ ডিম প্রোটিন এবং ভালো ফ্যাটের উৎস তবে একবার ফ্যাট এ্যাডাপটেশন হয়ে গেলে চাইলেও এত খেতে পারবেন না।
৫) দেশি মুরগি খেতে পারেন, এক দুই টুকরো অথবা উল্লিখিত গরুর মাংস । মাছ খেলে মাংস খাবেন না। মাংস খেলে মাছ খাবেন না। তবে প্রবাসে অবস্থানকরীগণ ফার্মের মুরগি এক টুকরো করে খেতে পারেন৷ কারণ সেখানে ফার্মের মুরগিকে আদর্শ খাবার খাওয়ানো হয় (যদিও মুরগী ব্যায়াম করে না যেটা দেশী মুরগী করে )।
৬) দুম্বা, উট, ভেড়ার মাংস খেলে এক টুকরোর বেশি নয়।
> বিকেলের নাস্তাঃ
বিকেলে ক্ষুধা লাগলে উপরে উল্লেখিত চা, বাটার কফি এবং বাদাম খাবেন যে কোন প্রকার মাখন বা ঘি দিয়ে ভাজা বা মেশানো।
> রাতের খাবারঃ
১) রাতের খাবারের পূর্বেও ভিনিগার মিশ্রিত এক গ্লাস পানি খেয়ে নিবেন।
২) রাতের খাবার দুপুরের অনুরূপ খাবেন। আইটেম দুই একটা কম বেশি হোক কোন সমস্যা নেই।
৩) রাত আটটার আগেই সমস্ত খাবার শেষ করুন। এরপর আর পানি ছাড়া কিছুই খাবেন না।
যে বিষয় গুলো মানতেই হবেঃ
১) রাত দশটা বা সর্বোচ্চ এগারোটার ভেতর আপনাকে ঘুমিয়ে যেতে হবে৷ কারণ রাত দশটা থেকে দুইটার ভেতর আমাদের শরীরে গ্রোথ হরমোন নি:সরন হয়৷ এবং এই গ্রোথ হরমোনগুলো ফ্যাট বার্নিং এ প্রচুর সহায়তা করে। আপনি যদি এই প্রাকৃতিক বিষয়টি অগ্রাহ্য করেন তবে আপনার ডায়েট অসম্পূর্ণ থেকে যাবে এবং ভাল ফল পেতে ব্যর্থ হবেন।
২) খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠবেন৷ নামাজ পড়ে (মুসলমানেরা) হাঁটতে বের হবেন।খালিপেটে হাটা ফ্যাট বার্ণিং এর জন্য অত্যান্ত কার্যকরী । হাঁটার গতি নির্ভর করবে আপনার বয়স অনুসারে। বয়স যদি চল্লিশের উর্ধ্বে হয় স্বাভাবিক গতিতে হাঁটুন ৪০/৬০ মিনিট। বয়স যদি চল্লিশের নিচে হয় তবে জগিং করুন নয়তো জোরে জোরে হাঁটুন ৪০/৬০ মিনিট। তবে খেয়াল রাখবেন হাঁটতে হাঁটতে যেন হাঁপিয়ে না যান বা শ্বাস কষ্ট না হয়। যতটুকু হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন শরীরের সাথে মানিয়ে করুন।
আরও পড়ুনঃ স্থায়ীভাবে পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধির উপায় । পুরুষাঙ্গের ব্যায়াম | লিঙ্গ বড় করার উপায়
৩) দ্রুত মেদ ভুরি কমানোর জন্য ইয়োগা করতে পারেন৷ ইয়োগা করার পদ্ধতি YouTube এ দেখে নিন।
৪) উপরে লিখিত পদ্ধতিতে সাত থেকে আট দিন নিয়ম করে চলুন। এই সময়টায় আপনার শরীর ফ্যাট বার্নিং বা চর্বি গলাতে শিখে যাবে৷ এটা হচ্ছে আপনার ডায়েটিং এর প্রথম ধাপ।
৫) এবার দ্বিতীয় ধাপে শুরু করুন রোজা রাখা৷ সেহরীতে শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখা আরম্ভ করুন৷ স্বাভাবিক রোজার মতো দিনে পানি এবং সমস্ত কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৬) ইফতার করবেন বাদাম, মাখন এবং শসা দিয়ে৷ সাথে অন্যান্য সালাদ কিংবা টক ফল রাখতে পারেন।
৭) ভিনেগার মিশ্রিত পানি খেয়ে রাতের খাবার উপরে উল্লিখিত অনুরূপ খাবেন এবং অবশ্যই আটটার আগে সমস্ত খাবার শেষ করুন। বেশী ভালো ফল পেতে ইফতারের এক ঘন্টার ভেতর খাবার শেষ করুন এরপর পানি খেতে থাকুন।
৮) রোজা রাখা শুরু করলে বসা থেকে দাঁড়াতে মাথা সামান্য ঘুরতে পারে৷ সেক্ষেত্রে সামান্য লবন মিশ্রিত পানি খাবেন প্রতিদিন৷ এছাড়া ডাবের পানি খেতে পারেন৷ প্রতিদিন একটি কচি ডাব খাওয়া খুবই জরুরি।
৯) একটানা যতগুলো ফাস্টিং (রোজা) করতে পারবেন আপনি তত দ্রুত ফল পেতে থাকবেন। তবে ৭ দিন পর দুইদিন রোজা বিরতি দিবেন৷ ঐ দুইদিনও দুইবেলা খাবেন চার ঘন্টার ব্যাবধানে৷ খাদ্য মেনু আগেরগুলাই৷ বাকী সময় ওয়াটার ফাস্টিং করবেন৷ অর্থাৎ ভিনেগার, লেবু, গ্রীন টি, লবন মিশ্রিত পানি এগুলো খাবেন।
১০) যদি এক টানা রোজা রাখতে না পারেন তবে সপ্তাহে অন্তত দুইটা করে রোজা রাখুন৷ আর যাদের পুরো দিনে রোজা রাখতে সমস্যা আছে তারা উপরের ম্যানুগুলো অনুসরণ করে খাদ্যবিরতির সময়টা দীর্ঘ করবেন৷ অর্থাৎ আংশিক ফাস্টিং করে যাবেন৷ দুইবেলা খাবেন চার ঘন্টার ব্যাবধানে৷ খাদ্য মেনু আগেরগুলাই৷ বাকী বিশ ঘন্টা ওয়াটার ফাস্টিং করবেন৷ অর্থাৎ ভিনেগার, লেবু, গ্রিন টি, লবন মিশ্রিত পানি এগুলো খাবেন৷ সে সাথে নিয়মিত হাঁটুন এবং ব্যায়াম করুন। আশা করা যায় দেড়, দুই মাসের ভেতরেই আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে গেছেন।
আরো কিছু বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়ঃ
১) যতটুকু সম্ভব টেনশন ফ্রী থাকার চেষ্টা করবেন।
২) হাসি খুশি থাকবেন।
৩) প্রতিদিন হাঁটার সময় বা হাঁটার পরে সকালের স্নিগ্ধ রোদ গায়ে লাগানোর চেষ্টা করবেন৷ কারণ রোদে থাকা ভিটামিন ডি আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
৪) রাত আটটার ভেতর সমস্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যাবহার থেকে বিরত থাকুন এতে করে আপনার ঘুমের কোয়ালিটি ভালো হবে।
৫) মুসলমান হলে নিয়মিত নামাজ পড়বেন। বেশি বেশি নফল নামাজ পড়বেন। এতে আপনার ফরজ আদায় হওয়ার পাশাপাশি শারীরিক কিছু ব্যায়াম হবে৷ যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অন্য ধর্মের হলে নিজ নিজ ধর্মের রীতি অনুসারে ইবাদত করুন। আর সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রাখুন এবং ভরসা রাখুন। অবশ্যই আপনি সফলকাম হবেন।
৬) বাহিরের সকল খাবার পরিহার করুন।
৭) তরকারির জন্য প্যাকেটজাত মসলা না কিনে নিজেরা গোটা মসলা মেশিনে ভাঙ্গিয়ে নিন৷ সকল প্রকার প্যাকেটজাত দ্রব্য পরিহার করার চেষ্টা করুন।
৮) রান্নায় সয়াবিন তেলের পরিবর্তে এক্সটা ভার্জিন অলিভওয়েল ব্যবহার করতে না পারলে আপাতত মন্দের ভালো হিসেবে শরিষার তৈল ব্যবহার করুন৷ সেটাও প্যাকেটজাত না কিনে পারলে নিজেরা মেশিনে প্রক্রিয়া করে তৈরি করে নিন।
আরও পড়ুনঃ সহবাসের পর শরীর দুর্বল হলে করণীয় কী কী
কিটো ডায়েটের ঝুঁকিসমুহঃ হাভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকদের মতে, এতে প্রচুর চর্বি খেতে হয়,যা রক্তে LLD বা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। LLD বেড়ে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। যাদের আগে থেকে ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জন্য এটা ক্ষতিকর। হঠাৎ করে কিটো ডায়েট শুরু করে দিলে যকৃতের উপর বাজে প্রভাব পড়ে। হাজার বছর ধরে যকৃত শর্করা বিপাকে অভ্যস্ত,কিটো চক্রে নয়। তাই হুট করেই কিটো ডায়েট শুরু করা যাবে না। আস্তে আস্তে খাবারে শর্করা কমাতে হবে এবং ফ্যাট বা চর্বি বাড়াতে হবে। ফলমূল নিষেধ থাকায় ভিটামিন ও খনিজের অভাব হয়।
তবে আপনার যদি দ্রুত ওজন কমাতে হয় তাহলে কিটো ডায়েটই আপনার সবচেয়ে সহজ উপায়। কিন্তু গুগল কিংবা ইন্টারনেট থেকে যদি আপনি কিটো ডায়েটচার্ট তৈরি করে নেন তবে তা আপনার মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিটো ডায়েট শুরু করার জন্য অবশ্যই আপনাকে একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং একটা ডায়েট চার্ট তৈরি করিয়ে নিতে হবে। তাহলে আর দেড়ি কেনো? চলুন শুরু করা যাক ‘মিশন ওজন কমাও।’