কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

আজকে আমরা কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব। কৃমির নাম শুনলে অনেকের গায়ের ভেতরে ঝাঁকি দিয়ে ওঠে। এটি দেখতে অনেকটা কেঁচোর মতো। তবে সাধারণত আমাদের পেটে যে কৃমি এগুলো হয়ে থাকে সেগুলো অনেক ছোট আকৃতির। কিন্তু ছোট হলেও আপনি জেনে অবাক হবেন যে একটি কৃমি প্রতিদিন মানুষের অন্তর থেকে শূন্য দশমিক দুই মিলিলিটার রক্ত শোষণ করে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে ছোট্ট এই পরজীবীর আক্রমণ আমাদের শরীরের জন্য কতটা বিপদজনক।

Ask Question
কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

আরও পড়ুনঃ আঁচিল কেন হয় | মুখের আঁচিল দূর করার উপায়


কৃমি কেন হয়?

কৃমি সংক্রমনের প্রধান উৎস হল অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতা। সাধারণত অপরিষ্কার বাসস্থান থেকেই কৃমির আক্রমণ ঘটে থাকে। তাছাড়া যে সকল কারণে আপনার শরীরে কৃমির সংক্রমণ হতে পারে সেগুলো হলো:

Honey Sponsored
  • হাত না ধুয়ে খাবার খেলে
  • টয়লেট থেকে এসে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত মুখ ধৌত না করলে
  • ফলমূল কিংবা শাকসবজি ধুয়ে না খেলে
  • স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় কিংবা অপরিচ্ছন্ন স্থানে খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি করলে
  • অনিরাপদ পানি পান করলে
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থাকলে
  • সব সময় ময়লা আবর্জনার ভেতরে খেলাধুলা করলেও বাচ্চাদের কৃমির সংক্রমণ হয়ে থাকে। 

আরও পড়ুনঃ গুড়া কৃমির ওষুধের নাম কী


কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়

কৃমির সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে কিছু ঘরোয়া উপায় এবং সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। এগুলোর মধ্যে প্রথম শর্ত হলো সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এবং বাসস্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। পাশাপাশি নিজের নিয়ম গুলো মেনে চলা: 

  • খাবার খাওয়ার আগে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে
  • যেকোনো ফলমূল কিংবা শাকসবজি খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে
  • টয়লেট থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত মুখ ভালোভাবে ধুতে হবে
  • অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খালি পায়ে হাঁটা যাবে না
  • অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোন খাবার খাওয়া যাবে না
  • অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় থাকা যাবে না
  • সব সময় স্যাঁতসেতে জায়গা পরিহার করতে হবে। 
  • নিরাপদ পানি পান করতে হবে। 
  • বাচ্চাদেরকে যথাসম্ভব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং ময়লা হাত যেন মুখে না দেয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
  • সম্ভব হলে মাঝে মাঝে কাঁচা নিম পাতার রস পান করতে হবে।
  • প্রতি তিন মাস পর পর পরিবারের সবাইকে একটি করে অ্যালবেনডাজল ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। তবে অ্যালবেনডাজল খাওয়ার নিয়ম গুলো অবশ্যই দেখে নিতে ভুলবেন না।

আরও পড়ুনঃ ঘুমের ঔষধের নাম কি


কৃমি সংক্রমনের লক্ষণ

কৃমিতে আক্রান্ত হলে সাধারণত শিশুদের পেট ফুলে যায় এবং অপুষ্টিতে ভুগতে থাকে। সেই সাথে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে পুষ্টির অভাব, রক্তশূন্যতা, আমাশয়, পেট ফাঁপা, পেট কামড়ানো এবং পায়ুপথে চুলকানি সহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। 

কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

সাধারণত প্রতি তিন মাস পর পর পরিবারের সকল সদস্যদের একই সাথে অ্যালবেনডাজল ট্যাবলেট সেবন করতে হয়। আপনি যদি মেবেনডাজোল সেবন করেন তবে পরপর তিনদিন খেতে হবে। সংক্রমনের মাত্রা অত্যাধিক হলে ৭ দিন পর আরেকটা ডোজ সেবন করতে পারবেন। বড়দের কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম এর মতই হলো শিশুদের আলবেন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম। কিন্তু শিশুর বয়স যদি দুই বছরের বেশি হয় তবে কৃমির ঔষধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কৃমির ঔষধ সেবনের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় জানা জরুরী।


আরও পড়ুনঃ থাইরয়েড কি? এর কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার।


  • কৃমির ঔষধ খেলে পেটের ভেতরে ফুটো হয়ে যায় এমন ধারণা কুসংস্কার মাত্র। তবে অনেকের এই ঔষধ সেবন করার পর বমি বমি ভাব হতে পারে। এই ঔষধ সম্পূর্ণ নিরাপদ।
  • ঔষধ সেবনের পূর্বে চিনি খেতে হয় বা মিষ্টি খেতে হয় এমন ধারণার কোন ভিত্তি নেই। অনেকেই জানতে চান কৃমির ট্যাবলেট কি খালি পেটে খেতে হয়? না, আপনি যেকোন খাবার খাওয়ার পরেই কৃমির ঔষধ সেবন করতে পারবেন। 
  • গরম আবহাওয়া কৃমির ঔষধ সেবন করতে নেই এটাও এক ধরনের কুসংস্কার। যেকোনো আবহাওয়াতেই শরীর সুস্থ থাকলে কৃমির ঔষধ সেবনযোগ্য।
  • বাচ্চাদের কৃমির সংক্রমণ হলে খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন পায়ুপথে হাত দিয়ে সেই হাত পুনরায় আবার মুখে না দেয়। এতে করে সংক্রমণ বাড়তে পারে।
  • কৃমির ঔষধ সেবন করার পর যদি অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করা হয় তবে কৃমি কখনো নির্মূল হবে না। ঔষধ সেবনের পর কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চলতে হবে।
  • শুধু গ্রামের কিংবা বস্তির ছেলেমেয়েদের কৃমির সংক্রমণ হয় এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। 
  • একই পরিবারে পাঁচ জন সদস্য থাকলে কৃমির ঔষধ পাঁচজনকে একই সাথে একই দিনে সেবন করতে হবে।
  • কৃমির ঔষধ সেবন করার ফলে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
  • মনে রাখতে হবে যে এই ঔষধ সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং কৃমির ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই

আরও পড়ুনঃ সর্দি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়


আশা করি কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। লেখাটি আপনার উপকারে আসলে প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

RelatedPosts

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ?

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ সে ব্যাপারে প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলার জানা অত্যন্ত জরুরী। কারণ অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং গর্ভের সন্তানের জন্য ছোটখাটো কিছু ভুল বড় ধরনের বিপদ বয়ে আনতে... Continue

পায়খানা-ক্লিয়ার-করার-উপায়-কোষ্ঠকাঠিন্য-দূর-করার-উপায়-কি

পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় | কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় কি

কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যায় ভোগেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। প্রতিদিন আমাদের কাছে অনেকেই পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় জানতে চান। বলা যায়– দৈনন্দিন জীবনে এটি খুবই পরিচিত একটি স্বাস্থ্য... Continue

ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল

ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল? ডায়াবেটিস নিয়ে প্রশ্নত্তোর।

ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চান বেশিরভাগ ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত রোগীরা। আমাদের আজকের লেখায় এ ধরনের কিছু প্রশ্নের উত্তর আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো। লেখাটি... Continue

ওজন কমানোর উপায় ডায়েট

দ্রুত ওজন কমানোর উপায় ডায়েট | কিটো ডায়েট

বেশ কিছুদিন ধরেই পৃথিবীজুড়ে কিটো ডায়েটের জয়জয়কার। দ্রুত ওজন কমানোর জন্য কিটো ডায়েট বিখ্যাত। তবে অনেকেই এর ভালো-মন্দ দিকগুলোর ফল না জেনেই ডায়েট শুরু করে দিচ্ছেন। যে কারণে... Continue

মনকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

মনকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায় জেনে নিন

মনকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায় এর কথা মাথায় আসলেই আমাদের একটা গান মনে পড়ে যায়, 'মন তোরে পারলাম না বুঝাইতে রে, তুই সে আমার মন'। আমি যেটা করতে চাই... Continue

সহবাসের সময় থুথু ব্যবহার করা যাবে কি

সহবাসের সময় থুথু ব্যবহার করা যাবে কি না

সহবাসের সময় থুথু ব্যবহার ব্যবহার করা যাবে কিনা সেটা নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিভিন্ন মতামত প্রচলিত রয়েছে। প্রাচীনকালে যখন লুব্রিকেন্ট জেল বলে কোন কিছু ছিল না তখন সহবাসের সময়... Continue