বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয়?

গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয় তা নিয়ে আপনারা অনেকেই জানতে চান। গর্ভপাত অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি ব্যাপার। তবে গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে প্রতি দুইটি গর্ভপাতের মধ্যে একটি গর্ভপাত হয়ে থাকে বাচ্চার ক্রোমোজোমজনিত সমস্যার কারণে। এক্ষেত্রে স্বামী কিংবা স্ত্রী কাউকেই দায়ী করা যাবে না। 

Ask Question

আবার অনেক সময় বাচ্চা নষ্ট করার জন্য অনেকে বিভিন্ন ওষুধ সেবন করে থাকেন। বাজারে গর্ভপাত করানোর ঔষধ এখন সহজলভ্য ভাবে পাওয়া গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনভাবেই তা সেবন করা উচিত নয়। তবে গর্ভপাত ওষধ সেবনের কারণেই হোক আর স্বাভাবিকভাবেই হোক দুইটাই অত্যন্ত বিপদজনক।

বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয়

গর্ভপাতের পরবর্তীতে মহিলাদের যে সমস্যা গুলো হয়ে থাকে চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।

Honey Sponsored
বাচ্চা নষ্ট করার পর কি কি সমস্যা হয়

রক্তক্ষরণ

বাচ্চা নষ্ট করার পর মাঝে মাঝেই যোনিপথে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এই রক্তক্ষরণ অনেক সময় কয়েকদিন নিয়মিত হয়ে থাকে আবার অনেক সময় কয়েক দিন পর পর হয়ে থাকে। যদি রক্তক্ষরণের পরিমাণ বেশি হয় তবে দ্রুত বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্জনীয়।

কালো কালো রক্তের ছোপ 

মাঝে মাঝে কালো কালো রক্তের ছোপ আসতে দেখা যায়। নষ্ট হয়ে যাওয়া ভ্রূণের বিভিন্ন অংশ সাথে সাথে বের না হওয়ার কারণে পরবর্তীতে এগুলো কালো রক্ত আকারে বের হয়ে আসে। 

কোমরের যন্ত্রণা

প্রায় সময়েই ব্লিডিং হবার কারণে কোমরের যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে। এই যন্ত্রণা কোমর থেকে শুরু করে হাটু পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।।

আরো পড়ুনঃ পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়

পেট ব্যাথা

গর্ভপাতের পর মাঝেমাঝে পেটে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা বিশেষ করে দেখা যায় যখন হালকা হালকা রক্তক্ষরণ হয় ঠিক তখনই। 

পিরিয়ডের সমস্যা

পিরিয়ড হতে অনেক সময় দেরি হতে পারে। বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাবার পর পিরিয়ডের যে নির্দিষ্ট সময় থাকে তা থেকে দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হয়ে যেতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ নিয়মিত মাসিক না হওয়ার কারণ গুলো জেনে নিন

রক্তস্বল্পতা

থেমে থেমে রক্তক্ষরণের কারণে এ সময় শরীরের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে পিরিয়ড হতে দেরি হয় এবং শারীরিক দুর্বলতা অনুভূত হয়। 

গর্ভধারণের ঝুকি

গর্ভপাতের ঠিক পরপরই কখনো পুনরায় গর্ভধারণ করা উচিত নয়। এতে করে পরবর্তী বাচ্চাও নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে বাচ্চা নষ্ট হবার পর পুনরায় গর্ভধারণ হতে চায় না। 

আরো পড়ুনঃ বিয়ের পর জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ। প্রাকৃতিক ও চিকিৎসার মাধ্যমে।

মানসিক অশান্তি

গর্ভের বাচ্চা যেভাবেই নষ্ট হোক না কেন মনের ভেতরে একটা অশান্তি কাজ করে। যেভাবেই হোক সন্তানের ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যাওয়া মানে মানসিকভাবে প্রচন্ড একটা অশান্তি সৃষ্টি হওয়া। মানসিক অশান্তি থেকে দূরে থাকতে পরিবারের সাথে সময় কাটান। 

শারীরিক দুর্বলতা

মাঝে মাঝে রক্ত ক্ষরণ মানসিক অশান্তি এবং খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো করতে না পারার কারণে এ সময় শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিয়ে থাকে। 

বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে কিভাবে ওয়াশ করে
বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে কিভাবে ওয়াশ করে

দেখুনঃ মহিলাদের স্বাস্থ্য কথা

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু

বাচ্চা নষ্ট হবার পরপরই প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। চিকিৎসকরা ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এই রক্তক্ষরণ বন্ধ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে কোনভাবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে শরীরের রক্তশূন্যতা দেখা দিলে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

বাচ্চা নষ্ট করার কতদিন পর মাসিক হয়?

এটা নির্ভর করে সম্পূর্ণ শারিীরিক পরিস্থিতির ওপর। বাচ্চা নষ্ট করার কতদিন পর মাসিক হবে এটা নির্দিষ্ট করে বলা যাবেনা। তবে সাধারনত বাচ্চা নষ্ট করার দিনকেই পিরিয়ড তারিখ হিসেবে গণ্য করা হয়। সে হিসেবে ২৮ থেকে ৩২ দিন পর মাসিক হবার কথা। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা অনেক পিছিয়ে যায়।

প্রথম বাচ্চা নষ্ট করলে কি হয়?

প্রথম বাচ্চা নষ্ট করলে পরবরতীতে ওপরে বর্ণিত সমস্যা গুলো হতে পারে।

বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে কিভাবে ওয়াশ করে?

বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে রক্ত আকারে বের হয়ে আসে। যদি কোন অংশ থেকে যায় তবে D&C সার্জারির মাধ্যমে বের করে আনা হয়।

কি খেলে পেটের বাচ্চা নষ্ট হয়?

বাচ্চা নষ্ট করার অনেক ঔষধ বাজারে পাওয়া যায়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এগুলো সেবন করা বিপদজনক।

বাচ্চা নষ্ট করার কতদিন পর সহবাস করা যায়?

এটা নির্ভর করে শারিীরিক সুস্থতার ওপরে। বাচ্চা নষ্ট করার পরের মাসিক ভালোভাবে হবার পর সহবাস করা উত্তম।

স্বাভাবিকভাবে বাঁচা নষ্ট হয়ে গেলে স্বামী এবং স্ত্রী কারো কিছু করার থাকে না। কিন্তু ঔষধ সেবন এর মাধ্যমে গর্ভপাত মানে হলো একটি জীবন হত্যা করা। তাছাড়া অনেক সময় নষ্ট হয়ে যাওয়া বাচ্চার বিভিন্ন অংশ বাহিরে বের হতে পারে না যা পরবর্তীতে সার্জারি করে বের করতে হয়। আবার অনেক সময় গর্ভপাতের পর ইনফেকশন হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে বলা যায় যে গর্ভপাতের অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা বহন করা অনেক মহিলার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। সুতরাং গর্ভপাত এড়িয়ে চলুন।

RelatedPosts

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ?

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ সে ব্যাপারে প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলার জানা অত্যন্ত জরুরী। কারণ অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং গর্ভের সন্তানের জন্য ছোটখাটো কিছু ভুল বড় ধরনের বিপদ বয়ে আনতে... Continue

ফ্রি অনলাইন ডাক্তার পরামর্শ নিন

বাংলাদেশের সেরা অনলাইন ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে আমাদের এই পরিষেবার আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে আমাদের দেশের মানুষ হাসপাতালে কিংবা ব্যক্তিগত চিকিৎসাকেন্দ্রে গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতে পারেন না।... Continue

সহবাসের সময় যোনি শুকিয়ে যায় কেন । ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস

সহবাসের সময় যোনি শুকিয়ে যায় কেন । ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস

আপনি কি জানেন সহবাসের সময় যোনি শুকিয়ে যায় কেন? সহবাসের সময় যোনি শুকিয়ে যাওয়ার মত ঘটনার মুখোমুখি আমরা অনেকেই হয়ে থাকি। সাধারণত মহিলাদের বয়স ৪৫ বছরের উপরে হলে... Continue

সহবাসের পর জলে কেন

সহবাসের পর জ্বলে কেন । মুক্তি পেতে যা করবেন

সহবাসের সময় যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া বর্তমান সময়ে অনেক মহিলাদের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। এর পেছনে বিভিন্ন শারীরিক এবং পারিপার্শ্বিক কারণ থাকতে পারে। যদি শারীরিক কোন সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের... Continue

female health

নোরিক্স খেলে কি হয়?

নোরিক্স খেলে কি হয় এই প্রশ্নটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় যারা নতুন বিয়ে করেছেন কিংবা ইমার্জেন্সি পিলগুলো সম্পর্কে জানতে চান তাদের ক্ষেত্রে। বলে রাখা ভালো যে নোরেক্স হলো... Continue

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলো

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি জেনে নিন | ১৪ টি প্রাথমিক লক্ষণ

পিরিয়ড মিস হওয়াই গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। তবে এটি ছাড়াও গর্ভাবস্থায় একজন নারীর অনেক ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় পিরিয়ড মিস হলে... Continue