জেনে নিন মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি

মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি আসলেও শরিরের জন্য নিরাপদ? শরীর মোটা হলে অনেক সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তবুও অনেকেই জানতে চান মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি? কারণ অতিরিক্ত চিকন হলেও আবার বাজে দেখায়। এক্ষেত্রে অনেকে মোটা হওয়ার সহজ উপায় হিসেবে অনেক কিছুই করে থাকেন। কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেখা যায় যে মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে সেগুলো কাজ করে না বললেই চলে। এদের মধ্যে কিছু রয়েছে যারা শরীর মোটাতাজাকরণের জন্য ঔষধ সেবন করে থাকেন যা প্রচন্ড ক্ষতিকর। আজকে আমরা শরীরের ওজন কমার কারণ এবং মোটা হওয়ার ঘরোয়া কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে জানব। 

Ask Question

শরীরের ওজন কমার কারণ

অসুখ-বিসুখ এর কারণে অনেক সময় শরীর মোটা হয়ে যায় আবার অনেক সময় শরীরের ওজন কমে যায়। তবে অসুস্থতা ছাড়াও শরীরের ওজন কমে যেতে পারে বিভিন্ন কারণে। যেমন ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, কিডনী সমস্যা, ফুসফুসের সমস্যা, বাজে খাদ্যাভ্যাস, জেনেটিক কারণ, মানসিক চাপে থাকা ইত্যাদি কারণে শরীরের ওজন লক্ষণীয়ভাবে কমে যেতে পারে। জটিল রোগ ব্যাধি না হয়ে থাকলে নিচে বর্ণিত উপায়গুলি অবলম্বন করে আপনি খুব সহজেই আপনার ওজন বাড়াতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা

Honey Sponsored

মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি

আপনার ওজন যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কমে যেতে থাকে তবে প্রথম তো একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদি জটিল কোন রোগে আক্রান্ত না হয়ে থাকেন তবে নিচের নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নেই মোটা হওয়ার সহজ উপায় গুলো।

মোটা হওয়ার সহজ উপায়
মোটা হওয়ার সহজ উপায়

১। স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন

যে কোনো শারীরিক এবং মানসিক সমস্যার পূর্ব শর্ত হলো স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ জীবন যাপন করা। অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে থেকে যত ভালো খাবার খাওয়া হোক না কেন শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে কোন উন্নতি হবে না। সুতরাং যথাসম্ভব চেষ্টা করুন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশের থাকার।

আরো পড়ুনঃ শুক্রাণু বৃদ্ধির ঔষধের নাম কী

পানি পান

২। পানি পান

আমরা কমবেশি সকলেই জানি যে আমাদের শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ হচ্ছে পানি। সুতরাং যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা না হয় সে ক্ষেত্রে আমাদের শরীর শুকিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। চিকিৎসকদের মতে একজন স্বাভাবিক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে খাবার হজমের পাশাপাশি শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো বের হয়ে যায় এবং শরীরে ক্লান্তি আসে না। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।

৩। শারীরিক ব্যায়াম

স্বাভাবিকভাবে মনে করা হয় যে শরীরের ওজন কমাতে শারীরিক ব্যায়াম করতে হয়। কিন্তু শুধু তাই নয়, শরীরের ওজন বাড়াতে ও শারীরিক ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকরী একটি পদ্ধতি। আপনি প্রতিদিন যে খাবার গ্রহণ করবেন তা সঠিকভাবে হজম এবং প্রাপ্ত পুষ্টি উপাদান শরীরে সুষম বন্টন এর জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা প্রয়োজন। সম্ভব হলে জিমে গিয়ে ট্রেইনার এর নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যায়াম করুন। এতে আপনার শরীরের স্ট্রেন্থ বাড়ার পাশাপাশি পেশীগুলো সুগঠিত হতে থাকবে। 

আরো পড়ুনঃ নিয়মিত মাসিক হওয়ার প্রাকৃতিক উপায়

৪। কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ

যারা ওজন কমাতে চায় তাদের সব সময় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহন করতে বারণ করা হয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে কার্বোহাইড্রেট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কার্বোহাইড্রেট এর প্রধান উৎস হলো ভাত এবং রুটি। তাই খাবারের তালিকায় প্রতিদিন কমপক্ষে দুইবার উচ্চ কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন। 

৫। বার বার খাবার গ্রহণ

যাদের ওজন কম তারা স্বাভাবিকভাবেই একসাথে খুব বেশি খাবার খেতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে কার্যকরী সমাধান হলো কিছু সময় পর পর খাবার গ্রহণ করা। প্রয়োজনে এই খাবারের তালিকায় দুধ, দই, ছানা আরো অন্যান্য কিছু হালকা খাবার রাখতে পারেন। এতে করে স্বাভাবিক খাবারের সাথে এই খাবারগুলো আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে দ্রুত সহায়তা করবে।

আরো পড়ুনঃ দ্রুত বীর্য পাতের চিকিৎসা ও কার্যকরী কিছু খাবার।

৬। চকলেট এবং চিজ

বাহিরের খাবার এবং ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গুলো যদিও স্বাস্থ্যের জন্য একটু অস্বাস্থ্যকর তবে এগুলো ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রচন্ড কার্যকরী। আইসক্রিম, পেস্ট্রি, বার্গার, পিৎজা, হালিম এই খাবারগুলোতে উচ্চমাত্রার ক্যালোরি থাকে যা দ্রুত ওজন বাড়াতে সহায়তা করে। 

৭। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ

কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালরির পাশাপাশি প্রোটিন ও ওজন বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সকল প্রকার মাছ মাংস এবং ডিম প্রোটিনের অন্যতম উৎস। তাই চেষ্টা করুন প্রতিদিনের খাবার তালিকায় এক বা একাধিক প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহন করতে। এটি আপনার ওজন বাড়াতে সহায়তা করবে।

৮। দুধ এবং মধু

প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে দুধ এবং মধু খাওয়ার চেষ্টা করুন। রাতে ঘুমানোর সময় আমাদের শরীরে তুলনামূলক ক্যালোরি খরচ কম হয়। সুতরাং ঘুমানোর পূর্বে যদি অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করা হয় তবে তা শরীরের ওজন খুব দ্রুত বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। তাছাড়া দুধ এবং মধুতে ক্যালরি পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান।

আরো পড়ুনঃ মুখের ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায়

৯। ড্রাই ফ্রুটস

ড্রাই ফ্রুটস

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ড্রাই ফ্রুটস নির্দেশিত হলেও ওজন বাড়াতে ও সহায়তা করে। অন্যান্য স্বাভাবিক খাবারের সাথে যদি কাজুবাদাম কিসমিস মিষ্টি কুমড়ার বীজ কাঠবাদাম মোরব্বা টুটি ফুটি ইত্যাদি গ্রহণ করা যায় তবে আশা করা যায় এক মাসের মধ্যে ওজন বাড়ানো সম্ভব। 

১১। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন

ওজন বাড়ানোর আরেকটি অন্যতম শর্ত হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম এবং বিশ্রাম নেওয়া। পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম গ্রহণকৃত খাবার এর পুষ্টি উপাদান শরীরে সুষম বন্টন করতে সহায়তা করে। 

১২। মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন

শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার পূর্ব শর্ত হলো মানসিকভাবে সুস্থ থাকা। সুতরাং যতটা সম্ভব টেনশন এবং মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন। এতে করে মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা আপনাকে মোটা হতে সহায়তা করবে। 

১৩। কোল্ড ড্রিংকস

বাজারে প্রাপ্ত বিভিন্ন সফট ড্রিঙ্ক যেমন কোকাকোলা পেপসি ইত্যাদি উচ্চমাত্রার ক্যালরি বহন করে। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন চেষ্টা করুন সফট ড্রিংকস পান করার। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় এই সকল পানীয় পান করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে ।

আরো পড়ুনঃ জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ। প্রাকৃতিক ও চিকিৎসার মাধ্যমে।

 ১৪। অন্যান্য বাজে অভ্যাস পরিত্যাগ করুন

অনেক সময় আমাদের বাজে অভ্যাসের কারণে শরীরের ওজন কমে যায়।  যেমন অতিরিক্ত পরিমাণে স্বপ্নদোষ, হস্তমৈথুন, পর্ণোগ্রাফিতে আসক্তির এবং যৌনাসক্ত মনোভাবের কারণে আমাদের ওজন কমে যাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে।  সুতরাং এই ব্যাপারগুলোতে আমাদের সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরী। 

 সতর্কতা

 শরীরে ওজন বাড়াতে গিয়ে কখনো এমন পরিমাণ খাবার গ্রহণ করবেন না যাতে করে আপনার নিজের শারীরিকভাবে  অস্বস্তি বোধ হয়। এছাড়া খোলাবাজারে মোটা হওয়ার যে সকল ঔষধ বা হারবাল চিকিৎসা সহজলভ্য রয়েছে সেগুলো থেকে দূরে থাকুন। অনেকে আপনাকে সাত দিনে মোটা হওয়ার উপায় বলে দিবে কিন্তু সেটা কখনোই নিরাপদ হতে পারেনা।  জীবন যাত্রার মান পরিবর্তন করুন এবং উপরের নির্দেশনা গুলো অনুসরন করুন।এতে করে খুব সহজেই আপনি নিরাপদ উপায় ওজন বাড়াতে পারবেন।  

টপিকঃ মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি, শরীর স্বাস্থ্য মোটা হওয়ার উপায়, রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায়, বাচ্চাদের মোটা হওয়ার সহজ উপায়, মোটা হওয়ার ইসলামিক উপায়,স্বাস্থ্যবান হওয়ার উপায়, মোটা হওয়ার সহজ উপায় ঔষধ, মোটা হওয়ার সহজ উপায় ঘরোয়া পদ্ধতিতে, মোটা হওয়ার ডাক্তারি টিপস।

RelatedPosts

 এলার্জির চিকিৎসা

এলার্জি দূর করার উপায় | ঠান্ডা এলার্জির চিকিৎসা

এলার্জি দূর করার উপায় বলতে আমরা শুধু ঔষধ সেবনই বুঝে থাকি। কিন্তু ঠান্ডা এলার্জির চিকিৎসা ঔষধ খাওয়ার মাধ্যমে এবং ঘরোয়া উপায়ে, দুইভাবেই করা সম্ভব। ঠান্ডা এলার্জি অন্যান্য রোগের... Continue

কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

কালোজিরা অতি জনপ্রিয় ও প্রসিদ্ধ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রোগের উপশম হিসেবে এর ব্যবহার শোনা যায়। কালোজিরার শুধু ঔষধী গুণ নয় মসলা হিসেবেও রয়েছে এর অনেক... Continue

মনকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

মনকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায় জেনে নিন

মনকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায় এর কথা মাথায় আসলেই আমাদের একটা গান মনে পড়ে যায়, 'মন তোরে পারলাম না বুঝাইতে রে, তুই সে আমার মন'। আমি যেটা করতে চাই... Continue

কেন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ সেবন করা উচিত নয় ?

আমাদের দেশে খুব ভয়ঙ্কর একটা ব্যাপার হল শারীরিক ছোটখাটো অসুস্থতায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ঔষধ সেবন করা। যেমন দুইদিন ধরে শরীর জ্বর জ্বর ভাব করছে। তিনবেলা প্যারাসিটামল খেলাম কিন্তু... Continue

ইনডেভার ১০ কেন খায়

ইনডেভার ১০ কেন খায়

ইনডেভার ১০ মূলত প্রপানলোল হাইড্রোক্লোরাইড জেনেরিক এর একটি ঔষধ। এটি বাজারজাত করে থাকে এসিআই লিমিটেড। ইনডেভার ট্যাবলেট ১০ মিলিগ্রাম এবং ৪০ মিলিগ্রাম স্ট্রেন্থ এ পাওয়া যায়।    ইনডেভার... Continue

কোমল পানীয় এর ক্ষতিকর দিক

কোমল পানীয় এর ক্ষতিকর দিক

গরমে তৃষ্ণা থেকে বাঁচার জন্য, খাবার হজমের মাধ্যম হিসেবে অথবা খাবার প্রিয় মানুষের আত্মতৃপ্তি ও সতেজতার জন্য প্রায়ই আমরা কোমল পানীয় বা soft drinks পান করে থাকি। ছোট... Continue