পিটুইটারি গ্রন্থিকে প্রভু গ্রন্থি বলে কেন
পিট্যুইটারি গ্রন্থি থাকে মাথায়। শুধু মানুষের মাথায় থাকে এমন না, এই গ্রন্থি সকল প্রাণির মাথায় থাকে। এই গ্রন্থি কী, সেটা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গভাবে বুঝতে ও জানতে গেলে আমাদেরকে রীতিমতো ডাক্তারী পড়তে হবে অথবা চিকিৎসা শাস্ত্র বা জীববিজ্ঞান সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান থাকতে হবে। তাই এই গ্রন্থি কী, সেটা পূর্ণভাবে জানার সবার দরকার নেই। কারণ এটা সম্পর্কে বললে সবাই সবকিছু বুঝবে না। তাই আপাতত এটুকু জেনে রাখলে হবে যে, পিট্যুইটারি গ্রন্থি মাথায় থাকে।
পিটুইটারি গ্রন্থিকে প্রভু গ্রন্থি বলে কেন
এই পিটুইটারি গ্রন্থিকে প্রভু গ্রন্থি বলে কেন? এই গ্রন্থির ক্ষমতা ও কাজ সম্পর্কে জানলে এই প্রশ্নের উত্তর নিজে থেকে পেয়ে যাবেন আশাকরি। এবার এই গ্রন্থির কাজ ও ক্ষমতা সম্পর্কে জেনে নিই –
- সকল প্রকার অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির নিঃসৃত হরমোনকে এই পিট্যুইটারি গ্রন্থি নিয়ন্ত্রণ করে।
- আপনি কতটুকু লম্বা হবেন, তা নির্ভর করে HGH হরমোনের উপর। আর এই HGH হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করে পিট্যুইটারি গ্রন্থি। তারমানে আপনার লম্বা হওয়া নিয়ন্ত্রণ করছে এই পিট্যুইটারি গ্রন্থি।
- FSH হরমোনের উপর নারী দেহের ডিম্বাশয় ক্ষরণ নিয়ন্ত্রিত হয়। আবার ICSH হরমোনের উপর পুরুষ দেহের শুক্রাণু ক্ষরণ নিয়ন্ত্রিত হয়। আর এই দুইপ্রকার হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে এই পিট্যুইটারি গ্রন্থি।
- TSH হরমোন থাইরয়েড গ্রন্থির আকার, ক্ষরণ ও আয়োডিন বিপাকে সাহায্য করে। এই TSH হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে পিট্যুইটারি গ্রন্থি।
- এসব ছাড়াও অন্যান্য অনেক হরমোনকে এই পিট্যুইটারি গ্রন্থি নিয়ন্ত্রণ করে।
- মাছের দ্রুত প্রজনন ঘটানোর জন্য পিট্যুইটারির গ্রন্থির নির্যাস মিশ্রিত একপ্রকারের ইনজেকশন দেওয়া হয়। এই ইনজেকশনের জন্য মাছ দ্রুত প্রজনন ঘটায়।
- মানুষের মাথার এই গ্রন্থির এতো ক্ষমতা যে, এটা প্রায় ২০-৩০ ওয়াটের একটা এনার্জি বাল্ব জ্বালাতে সাহায্য করে।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের প্রায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে এই গ্রন্থি। এই গ্রন্থি এতো কিছু করছে, তারমানে এটা অনেক বড় হওয়ার কথা ছিল! কিন্তু এটা এত বড় না? আসলে এতো ক্ষমতাধর গ্রন্থটি খুবই ছোটো। মানব দেহের এই গ্রন্থির ওজন মাত্র ০.৫ গ্রাম। এতো কম ওজনের ক্ষুদ্র গ্রন্থি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে জন্যই অভূতপূর্ব ক্ষমতার অধিকারী অর্থাৎ প্রভু গ্রন্থি বলা হচ্ছে পিট্যুইটারি গ্রন্থি কে ।
লেখা : সুদিপ্ত কুমার নাগ