মাইগ্রেন কি | মাইগ্রেন এর লক্ষণ ও নিরাময়ের উপায় জেনে নিন
মাইগ্রেন, যা শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রভাবিত করে থাকে। আমাদের অনেকেরই মাইগ্রেনের মাথাব্যথা আছে। আবার অনেকে সাধারণ মাথাব্যথাকে মাইগ্রেনের ব্যথা বলে মনে করে। আজকে আমরা এই মাইগ্রেনের মাথাব্যথা সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক ধারণা জেনে নিবো। বিভিন্ন জার্নাল থেকে সহজ ভাষায় আপনাদের সবার বোধগম্য করে লেখার চেষ্টা করলাম।
আরও পড়ুনঃ ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়
মাইগ্রেন কি
মাইগ্রেন হলো এক প্রকারের মাথাব্যথা যেটা মাথার অর্ধেক অংশে বা কোনো অংশে অনবরত মাথাব্যথার সৃষ্টি করে। এটা কিছু সময় থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। এটা তীব্র পর্যায়ে হলে বমি বমি ভাব, এমনকি বমিও হতে পারে এবং সেই সাথে চোখে ব্যথা তো আছেই। এটা হওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত সঠিক কারণ সেভাবে জানা যায় নি। তবে পরিবেশগত বা জেনেটিক কারণেও হতে পারে। সাধারণত অনেকেই স্বাভাবিক মাথাব্যথাকে মাইগ্রেনের মাথাব্যথা বলে মনে করে। সাধারণ মাথাব্যথার সাথে মাইগ্রেনের মাথাব্যথার মুল পার্থক্য হলো- এটা শুধুমাত্র মাথার একপাশেই হয়।
মাইগ্রেন এর লক্ষণ
মাইগ্রেনের ব্যাথা শুরু হওয়ার এক বা দুই দিন আগে আপনি এর সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলি লক্ষ্য করতে পারবেন, যা আসন্ন মাইগ্রেনের লক্ষণ বলে ধরা হয়। সেগুলো হলোঃ
আরও পড়ুনঃ হেপাটাইটিস বি কী ? হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ সমূহ ও নেগেটিভ করার উপায়
- আলো, শব্দ এবং গন্ধের প্রতি সংবেদনশীলতা।
- বমি বমি ভাব এবং বমি,
- পেট খারাপ এবং পেটে ব্যথা।
- ক্ষুধামন্দা
- খুব গরম (ঘাম) বা ঠান্ডা (ঠান্ডা) অনুভব করা।
- ফ্যাকাশে ত্বকের রঙ (ফ্যাকাশে)।
- ক্লান্ত বোধ।
- মাথা ঘোরা।
- ডায়রিয়া।
- জ্বর।
- বিরক্তি এবং বিষণ্নতা ভাব।
- কথা বলতে এবং পড়তে অসুবিধা।
- ঘুমাতে অসুবিধা।
- হাঁপানি।
- প্রস্রাব বেড়ে যাওয়া।
- পেশী শক্ত হওয়া।
- সাময়িক দৃষ্টিশক্তি হারানো।
- শরীরের একপাশে দুর্বলতা।
- ঘাড় ব্যথা ও শক্ত হয়ে যাওয়া।
- নাক বন্ধ।
- অনিদ্রা।
- বিষণ্ণ মেজাজ।
আরও পড়ুনঃ হার্টের সমস্যা বোঝার উপায় ও হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়
মাইগ্রেনের ব্যথা কেন হয়?
মাইগ্রেনের মাথাব্যথার কারণ খুবই জটিল এবং এটি সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায় না। আপনার যখন মাথাব্যথা হয়, তখন রক্তবাহী নির্দিষ্ট স্নায়ু আপনার মস্তিষ্কে ব্যথার সংকেত পাঠায়। এটি আপনার মাথার স্নায়ু এবং রক্তনালীতে প্রদাহজনক পদার্থ নির্গত করে। যার ফলে আপনার মাথা ব্যাথা অনুভুত হয়। নিচে মাইগ্রেনের ব্যথার কিছু কারণ দেওয়া হলোঃ
- এটা পরিবেশগত বা বংশগত কারণেও হতে পারে।
- অতিরিক্ত সময় রৌদ্রে থাকলে এটা হতে পারে।
- পরিমিত পরিমাণে বিশ্রাম না নিলে এবং কম পরিমাণে পানি খেলে।
- মহিলাদের মধ্যে হরমোনের পরিবর্তন হলে।
- হঠাৎ করে তাপমাত্রার পরিবর্তন হলে। ধরুন, আপনি অনেকক্ষণ এসিরুমে কাজ করে বের হয়ে আবারও এসিরুমে ঢুকলেন। সেসময় আপনি যদি অনেক কাজের চাপের মধ্যে থাকেন, তাহলে আপনার এই মাইগ্রেনের মাথাব্যথা হতে পারে।
- অতিরিক্ত কাজের চাপ পড়লে এটা হতে পারে।
- তীব্র আলো, প্রচণ্ড গরমে, অতিরিক্ত টেনশনে থাকলে ও অতিরিক্ত শব্দের মধ্যে থাকার কারণেও এটা হতে পারে।
- খাবারে নির্দিষ্ট রাসায়নিক এবং প্রিজারভেটিভের প্রতি সংবেদনশীলতার ফলে।
- অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, কিছু কিছু খাবারও মাইগ্রেনের জন্য দায়ী।
- দীর্ঘ সময় ভ্রমণে কম পরিমাণ পানি খেলে,
- আবেগী মানসিক যন্ত্রনায় থাকলে
- খালি পেটে থাকলে এবং কম পরিমাণ বিশ্রাম পেলে এই সমস্যা দেখা যায়।
আরও পড়ুনঃ হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর দিক এবং এর থেকে মুক্তির উপায়।
মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায়
এই মাইগ্রেনের সমস্যা চিরতরে সাড়ানো যায় না তবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অসুখের ধরণ অনুযায়ী মাইগ্রেনিল ০.৫ মি. গ্রা. ও মাইগ্রেনিল ১.৫ মি. গ্রা. সহ আরও নানা রকমের ওষুধ এবং পেইনকিলার ডাক্তাররা সাজেস্ট করেন। তবে কেউ ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত মোটেও কোনো ওষুধ খাবেন না। এছাড়া অনেক জার্নালে উল্লেখ করেছে যে, দীর্ঘদিন যাবত মাইগ্রেনের ওষুধ মানুষকে মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে। তবে তীব্র মাইগ্রেনের মাথাব্যথা হলে, সঠিকমাত্রায় ঘুমানো উচিত ও মাথায় বরফ লাগালে দ্রুত উপকার পাওয়া যেতে পারে।