খুশকি দূর করার উপায়

ত্বকের সাধারণ সমস্যা গুলোর মধ্যে একটি হলো খুশকির সমস্যা। এই সমস্যার আবির্ভাব ঘটে যখন মাথার ত্বকের আদ্রতা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়, ফলে পড়তে হয় একটি বিরক্তিকর পরিস্থিতিতে। অবশ্য আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছে যারা চুলের খুশকির সমস্যাকে তেমন একটা গুরুত্ব দিতে চায় না। তবে এমনটা বেশির ভাগ হয়ে থাকে পুরুষদের ক্ষেত্রে। কিন্তু এটা জেনে রাখা ভালো, সাধারণ খুশকির সমস্যা থেকে খুব সহজেই বেশ বড় ধরনের সমস্যার আবির্ভাব ঘটতে পারে। 

Ask Question

তাছাড়াও যেহেতু খুশকি শুষ্ক আবহাওয়া, মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে হয়ে থাকে, তাই এর ফলে হেয়ার ফল, চুলের রুক্ষতা এবং মাথার ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমনের দেখা দিতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন পূর্ব প্রস্তুতি বা পরবর্তী প্রস্তুতি। আর এই সম্পর্কে চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ এবং রূপ বিশেষজ্ঞরা বেশ পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

 আর তাদের সেই মতামতের ওপর ভিত্তি করে খুশকির সমস্যা দূর করতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে। বিভিন্ন ঔষধ খুশকি দূরীকরণে ব্যবহারের চাইতে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা অত্যন্ত ভালো এবং বেশ কার্যকরী। কারণ রাসায়নিক পদার্থ, বিভিন্ন কেমিক্যাল ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। 

Honey Sponsored

 

খুশকি দূর করার ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপায়

খুশকি দূর করার জন্য মানুষ বেশি মরিয়া হয়ে ওঠে শীতকালে। কারণ এ সময়টায় বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ কম থাকার কারণে ত্বকের রুক্ষতা বেড়ে যায়, যার ফলে মাথায় অতিরিক্ত পরিমাণে খুশকির আগমন ঘটে। সেইসব ভুক্তভোগীদের উদ্দেশ্যে কিছুদিন আগে রূপবিশেষজ্ঞ শিবানী দে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মাথার ত্বক ভালো রাখার এবং সঠিক আদ্রতা বজায় রাখার জন্য তেল মালিশের কোনো বিকল্প নেই।

‘মাথার টক ভালো রাখার এবং সঠিক আদ্রতা বজায় রাখার জন্য তেল মালিশের কোনো বিকল্প নেই।’

সপ্তাহে অন্তত তিন দিন তেল মালিশ করা হলে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। আর যদি সেটা সম্ভব হয়ে না ওঠে তাহলে সপ্তাহে অন্তত দুইবার তেল মালিশ করতেই হবে। শুধু তাই নয়, যদি ফলাফল আরো দ্রুত পেতে চান তাহলে আপনার ব্যবহারকৃত সেই তেলের সঙ্গে বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদান মেশানো যেতে পারে। যেমন,

 

নারকেল তেল

খাঁটি নারকেল তেল এক চা চামচ এর সাথে জলপাইয়ের তেল এক চা চামচ, তার সাথে সরিষার তেল এক চা চামচ ও লেবুর রস এক চা চামচ মিশিয়ে একসঙ্গে মাথায় মালিশ করা যেতে পারে। কারণ লেবুর রস সরিষার তেল পাশাপাশি জলপাইয়ের তেলের মধ্যে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানগুলো খুশকি দূরীকরণে বেশ কার্যকরী। পাশাপাশি চুলের গোড়া মজবুত রাখতে চুলের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে অত্যন্ত সহায়ক।

তবে হ্যাঁ, আপনি খুব সহজেই এবং পুরোপুরি ফল অর্জন করতে পারবেন যদি মাথায় এটি সঠিকভাবে মালিশ করে থাকেন। কখনোই চুলের গোড়ায় আঘাত করবেন না। সময় নিয়ে আলতো ভাবে ঘষে ঘষে তেল মালিশ করার চেষ্টা করবেন। শুধু তাই নয়,  চুল ভালোভাবে নিয়মিত আঁচড়াবেন। কারণ তেল ব্যবহার করা সেই সাথে চুল আঁচড়ে রাখা দুটোই খুশকি দূর করনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

 

টক দই

ঘরোয়া পদ্ধতিতে মাথার খুশকি সমস্যা দূরি করণে বেশ কার্যকরী একটি উপাদান টক দই। চিকিৎসকরা বলে থাকে টকদই খুশকির সমস্যায় বেশ কার্যকর। আর তাই এটি মাথার তোকে ভালভাবে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন পরবর্তীতে ধুয়ে ফেললে খুশকি দূর হতে হয়।

 

লেবুর রস

আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি লেবুর রস খুশকি দূর করনের জন্য আরেকটি কার্যকরী উপাদান। এটি মূলত দুই টেবিল চামচ পরিমাণ একটি পাত্রে নিয়ে অল্পকিছু পানির সঙ্গে মিশিয়ে 2 থেকে 5 মিনিট মাথার ত্বকে ভালোভাবে মেসেজ করে পরবর্তীতে ধুয়ে ফেললে বেশ ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে হ্যাঁ লেবুর রসে এক ধরনের এসিড থাকে তাই সপ্তাহে দুইবারের বেশি ব্যবহার করা একদমই উচিত নয়।

 

ভিনেগার

খুশকির সমস্যা দূর করতে আপনি অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। তবে এটি ব্যবহার করতে হবে সমপরিমাণ ভিনেগার ও পানি একসঙ্গে মিশিয়ে। তাই প্রথমত এটি ভালোভাবে মিশিয়ে নিন তারপর মাথার ত্বকে আলতোভাবে আস্তে আস্তে মালিশ করুন। মালিশ করার পরবর্তীতে 15 মিনিট অপেক্ষা করে তা ধুয়ে ফেলুন। তাহলে দেখবেন এক মাসের মধ্যে আপনার মাথা খুশকি মুক্ত হয়ে গেছে। তবে অবশ্যই সপ্তাহে দুইবারের বেশি এটা ব্যবহার করতে যাবেন না। এতে করে হিতে বিপরীত হতে পারে। 

 

গ্রীন ট্রি

গ্রীন ট্রি ব্যাকটেরিয়ার রোধে উপাদানসমৃদ্ধ। আর তাই মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কার্যকরী গ্রীন ট্রি। আপনি যদি খুব সহজে আপনার মাথার খুশকি দূর করতে চান তাহলে এটিও ব্যবহার করতে পারেন। তবে যেভাবে ব্যবহার করবেন, প্রথমে এক কাপ গরম পানিতে দুইটা টি ব্যাগ 20 মিনিটের মত ঝুলিয়ে রাখবেন এরপর ঠাণ্ডা হয়ে আসলে তার মাথার ত্বকে ব্যবহার করে 30 মিনিট অপেক্ষা করবেন। 30 মিনিট চলে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল গুলো ধুয়ে নেবেন।

 

আশা করি এই কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে খুব সহজেই আপনার খুশকির সমস্যা থেকে পরিত্রান মিলবে। তবে হ্যাঁ প্রাকৃতিক উপায়ে যদি আপনি খুশকির সমস্যা দূর করতে না পারেন তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খুশকি নিরোধক শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। তবে খুশকি দূর করার জন্য তেমন কোনো ওষুধ নেই যেটা খেলে আপনার মাথা থেকে অটোমেটিক খুশকি উধাও হয়ে যাবে। তবে কিছু মলম আছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন আপনি। তবে প্রাকৃতিক উপায় বাইরে যেটাই ব্যবহার করুন না কেন অবশ্যই চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন তাদের পরামর্শ গ্রহণ করুন পরবর্তীতে তা ব্যবহার করুন।

 

তাই পরিশেষে একটা কথাই বলবো মাথার খুশকি সমস্যা দূর করার জন্য সবার প্রথমে যে প্রাকৃতিক উপায় গুলো রয়েছে সেগুলো সঠিক নিয়ম মেনে প্রয়োগ করা। এতে করে খুশকি থেকে বাঁচতে ওষধ সেবন না করলেও চলবে। যাদের এই সমস্যাটি রয়েছে তারা আজ থেকেই উপরে বর্ণিত উপায়গুলো অবলম্বন করার চেষ্টা

 

RelatedPosts

কনডম ব্যবহারের নিয়ম সুবিধা ও অসুবিধা

কনডম ব্যবহারের নিয়ম সুবিধা ও অসুবিধা।

আমরা কমবেশি সবাই কনডম ব্যবহারের নিয়ম জানতে চাই। কিন্তু কোথায় থেকে জানবো সেটা খুঁজে পাই না। কারণ আমাদের দেশে যৌন সংক্রান্ত বিষয়গুলো গোপনে আলোচনা করা হয় এবং ট্যাবু... Continue

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ?

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ সে ব্যাপারে প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলার জানা অত্যন্ত জরুরী। কারণ অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং গর্ভের সন্তানের জন্য ছোটখাটো কিছু ভুল বড় ধরনের বিপদ বয়ে আনতে... Continue

অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায়

অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায় কি?

অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায় কি সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না। মহিলাদের জন্য অনিয়মিত মাসিকের বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। আমাদের ওয়েবসাইটে মাসিক নিয়মিত করনের কিছু উপায়... Continue

বাচ্চা হওয়ার পর পিল খাওয়ার নিয়ম

বাচ্চা হওয়ার পর পিল খাওয়ার নিয়ম কী

বাচ্চা হওয়ার পর পিল সেবনের নিয়ম গুলো সাধারণত অন্যান্য মহিলাদের মতই। তবে এক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম পদ্ধতি লক্ষ্য করা যায়। সাধারণত মহিলাদের সন্তান প্রসব করার ২১ দিন পর থেকেই... Continue

lubricant gel uses

লুব্রিকেন্ট জেল এর কাজ কি? লুব্রিকেন্ট জেল কি ব্যবহার করা নিরাপদ?

লুব্রিকেন্ট জেল এর কাজ কি এটা আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা। লুব্রিকেন্ট জেল হল এক ধরনের হালকা তরল জাতীয় পদার্থ যা মূলত যৌন সঙ্গমের সময় আরামদায়ক এবং যৌনাঙ্গ পিচ্ছিল... Continue

মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়

মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়

প্রশ্ন হল মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় ? পিরিয়ড বা মাসিকের তারিখ পার হয়ে যাবার পর অনেকেই দুশ্চিন্তা করে থাকেন যে গর্ভবতী হয়ে পড়লেন... Continue