খাবার খাওয়ার পর পায়খানা হয় কেন? জেনে নিন সমাধান।
খাবার খাওয়ার পর পায়খানা হয় কেন? আপনারও কি খাবার খাওয়ার পরপরই পেটে চাপ ধরে পায়খানার ভাব চলে আসে? যদি আপনার উত্তর হ্যা হয় তবে আপনি অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। যদি এমনটা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তবে এটি এক সময় গিয়ে আপনার জন্য বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।
পড়ুনঃ চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
বাহিরের কোন ভোজনে অংশগ্রহণ কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে গিয়ে এই পরিস্থিতি নিয়ে সবসময় ভেতরে একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করে। আমরা জানি যে খাবার খাওয়ার পর আমাদের খাবার হজম হয়ে মল আকারে বের হতে প্রায় ছয় থেকে আট ঘন্টা সময় লাগে। কিন্তু যারা এই সমস্যায় ভোগেন তাদের ক্ষেত্রে খাবার খেয়ে উঠতে না উঠতেই পায়খানার ভাব চলে আসে বা পেটের ভেতরে ব্যথা শুরু হয়ে যায়।
তাহলে খাওয়ার পর পায়খানা হয় কেন?
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে খাবার খাওয়ার পরপরই পায়খানার জন্য পেটের ভেতরে চাপ হওয়ার এই সমস্যাটিকে গ্যাস্ট্রোকলিক রিফ্লেক্স হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে। এই গ্যাস্ট্রোকলিক রিফ্লেক্স গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ট্রাক্টের একেবারে শেষ প্রান্তের রিফ্লেক্স নিয়ন্ত্রণ করে যার ফলে খাবার খাওয়ার পর কোলেনের সংকোচন ও প্রসারণ প্রক্রিয়ার কারণে হজম হয়ে যাওয়া প্রান্তিক খাবারগুলোকে শরীরের বাহিরে বের করে দিতে চায়। ঠিক এই সময়েই আমাদের পেটের ভেতরে পায়খানার একটা ভাব চলে আসে। গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই সমস্যার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
আরো পড়ুনঃ সেক্সে রসুনের উপকারিতা কি? কাঁচা রসুন খাওয়ার নিয়ম।
শুধু এই কারণেই খাবার পর পায়খানা হয় বিষয়টি এমন নয়। অনেক সময় উত্তেজনা, গ্যাস্ট্রিক আলসার, এলার্জি, ক্রনিক ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজেস ইত্যাদির কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া যাদের অন্ত্রের মাইক্রোবায়ামে ইনফেকশন থাকে তাদের ক্ষেত্রেও এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
এছাড়াও গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী সহ যারা অতিরিক্ত মসলাদার খাবার খায়, কোল্ড ড্রিংকস পান করে, ধূমপান করে এবং বাজে খাদ্যাভ্যাসের দ্বারা পরিচালিত হয় তাদের ক্ষেত্রেও এমন সমস্যা হয়ে থাকে। যাদের দুধ কিংবা দুগ্ধ জাতীয় খাবার পেটে সহ্য হয় না তাদের জন্য এটি একটি নৈমিত্তিক সমস্যা।
মুক্তির উপায়
এটি বিশেষ কোনো রোগ না হলেও অনেক সময় অনেক রোগীর ক্ষেত্রে জটিল আকার ধারণ করে। তাছাড়া এ ধরনের সমস্যা বাহ্যিক পরিবেশে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। আপনি যদি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তবে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সাপেক্ষে নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন। তাছাড়া যে সকল খাবার খেলে আপনার এমন সমস্যা হয়ে থাকে সে সকল খাবার এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত তেল চর্বি জাতীয় বা মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করুন। যদি ধূমপান কিংবা মদ্য পানের অভ্যাস থেকে থাকে তবে তা পরিহার করুন।