বিয়ের পর জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ। প্রাকৃতিক ও চিকিৎসার মাধ্যমে।

বিয়ের পর জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ দাম্পত্য জীবনের অন্যতম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাড়ায়। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে বিশেষ করে নবদম্পতিরা দ্বিধাদ্বন্দের মধ্যে ভুগে থাকেন। কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে কোন ধরনের সমস্যা ছাড়াই নিজের শরীরের সাথে মানিয়ে নেওয়া যাবে সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

Ask Question

বেশিরভাগ সময় দেখা যায় যে নতুন বিয়ে করার পর ডাক্তারের কোন পরামর্শ ছাড়াই স্ট্রিকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে মাসিক মুখে খাবার পিল খাওয়ানো শুরু করেন। এই ব্যাপারটাকে আসলে লঘু মনে করলেও ভবিষ্যৎ জীবনে এর চেয়ে একটা নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে সেটা সময়মতো বোঝা যায়। 

কার জন্য কোন পদ্ধতি উত্তম

অনেকেই বিয়ের পরে জান্তে চান মহিলাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কয়টি? চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রসারের কারণে বর্তমানে অনেক ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু রয়েছে। তবে কার জন্য বাচ্চা না নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি কোনটি সেটি জানতে হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

Honey Sponsored

সবচেয়ে জনপ্রিয় জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ হল খাবার বড়ি, কনডম এবং ইঞ্জেকশন। তবে অল্প বয়সেই নবদম্পতিদের জন্য বিশ্বব্যাপী তিন বছর কিংবা পাঁচ বছর মেয়াদি ইমপ্ল্যান্ট নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি উপযুক্ত হিসেবে স্বীকৃত হয়ে আসছে। 

অন্যদিকে ৩৫ বছর এর ওপর বয়সি নারীদের ক্ষেত্রে এই চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ তারা সে সময়ে গিয়ে আর সন্তান নিতে চান না। তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই একজন অথবা দুইটি করে সন্তান রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে একজন সুস্থ মধ্যবয়সী নারীর জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের যে কোন পদ্ধতি উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে যদি কারো উচ্চ রক্তচাপ কিংবা হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে থাকে তাদের ক্ষেত্রে খাবার বড়ি এবং ইনজেকশন ব্যবহার করা একদম অনুচিত। সে ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদ্ধতি হলো কপার টি এবং স্থায়ী পদ্ধতি।

 

জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ

কনডমঃ এটি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া সবচেয়ে উত্তম একটি পদ্ধতি। প্রতিবার সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার করলে যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং গর্ভধারণ রোধ করা যায় খুব সহজেই।

নিয়মিত খাবার বড়িঃ এই পদ্ধতি অবলম্বন করে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহবাসের সময় কোন কিছু ব্যবহার করা ছাড়াই। এক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন একটি করে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি পিল গ্রহণ করতে হয়। সুবিধাজনক এবং কম ঝামেলার কারণে এটি বহুল ব্যবহৃত একটি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। তবে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে এটি ব্যবহার করা একদম উচিত নয়। এখন কথা হল জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো সেটা নিয়ে অনেকে দ্বিধায় থাকেন। বর্তমানে এখন অনেক জন্মবিরতিকরণ পিল রয়েছে। তবে আমরা জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিলের নাম ও দাম নিয়ে আজ কথা বলবো না। 

জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ

প্রোথনঃ এই পদ্ধতি পরিচালিত হয়ে থাকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে। এটি গ্রহণ করে ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর পরিবর্তন করতে হয়।

ইনজেকশনঃ এই পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতি এক দুই কিংবা তিন মাস পর পর ইনজেকশন গ্রহণ করতে হয়। তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ কিংবা হৃদরোগজনিত ঝুঁকি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি গ্রহণ করা অনুচিত। এটি হল দীর্ঘমেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। 

আইইউডিঃ এটি ৫ থেকে ১২ বছরের জন্য কার্যকর থাকে। এই পদ্ধতি গ্রহণ করতে হলে অবশ্যই বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের শরণাপন্ন হতে হয়। যারা দীর্ঘমেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি পরিকল্পনা করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে এটি গ্রহণ করা উত্তম।

আরো পড়ুনঃ ফোরপ্লে কি এবং কিভাবে করতে হয় ?

প্রাকৃতিকভাবে বিয়ের পর জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ

প্রাকৃতিক উপায়ে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে সেটি পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্য সবচেয়ে ভালো। প্রাকৃতিক উপায়ে  অবলম্বন করলে কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে না এবং অর্থ খরচ করতে হয় না। জন্মনিয়ন্ত্রণের যেসকল প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে সেগুলো নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।

মাসিক হিসাবঃ পিরিয়ড বা মাসিক চক্রের হিসাব অনুযায়ী নিরাপত্তা ছাড়া সহবাস করলে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে নেই বললেই চলে। তবে এ ক্ষেত্রে মহিলাদের মাসিক সাইকেল নিয়মিত থাকতে হবে। বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে পিরিয়ডের নির্ধারিত তারিখ থেকে সাত দিন আগে এবং সাত দিন পরে এই সময়ের মধ্যে কোন কিছু অবলম্বন না করেই যৌন মিলন করলে সন্তান ধারণের সম্ভাবনা থাকেনা। অর্থাৎ কোন মহিলার পিরিওডের তারিখ যদি মাসের ১৯ তারিখ হয় তাহলে সেই মহিলা তার সঙ্গীর সাথে উক্ত মাসের ১৩ তারিখ হতে ২৬ তারিখের মধ্যে কনডম ছাড়া জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে পিরিওডের তারিখ কয়েকদিন কমবেশি হতে পারে। 

বাহিরে বীর্যপাত করাঃ এটি জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যতম একটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি। তবে এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হলে প্রথমদিকে আপনাকে অভ্যস্ত হতে হবে। যৌন মিলনের এক পর্যায়ে যখন পুরুষদের বীর্য বের হয়ে আসবে ঠিক তার আগের মুহূর্তে লিঙ্গ যোনির ভেতর থেকে বের করে বাহিরে বীর্যপাত করতে হবে। এক্ষেত্রে গর্ভধারণের সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না। তবে সঠিক সময়ে বের করে আনতে না পারলে এই পদ্ধতি আপনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে। কিন্তু প্রথমদিকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হলেও কিছুদিন চর্চা করলে পরবর্তীতে এটি খুব সহজ হয়ে যায়।

বুকের দুধ খাওয়ানোঃ এই পদ্ধতি কাজ করবে শুধুমাত্র সেই সকল নারীদের ক্ষেত্রে যারা তার শিশুকে প্রতিদিন বুকের দুধ পান করান এবং যাদের মাসিক এখনো শুরু হয়নি। এ সকল ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা ছাড়াই গর্ভধারণের ঝুঁকি এড়িয়ে চলা সম্ভব। 

 

জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি কোনটি ?

জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হলো প্রাকৃতিক পদ্ধতি গুলো। প্রাকৃতিক এই উপায়গুলি অবলম্বন করলে অর্থ খরচ না করে কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু যদি প্রাকৃতিক উপায় গুলো অবলম্বন করা সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে কনডম ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি আরও যে পদ্ধতি গুলো রয়েছে চাইলে সেগুলো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অবলম্বন করতে পারেন। প্রাকৃতিক পদ্ধতি গুলো এবং কনডম ব্যবহার ব্যতীত অন্য সকল জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির কোনো না কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।

আশা করি প্রাকৃতিক এবং চিকিৎসার মাধ্যমে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার সকল উপায় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। সুতরাং আপনার জন্য কোনটি উপযুক্ত সেটি নিচে কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এখনই নির্বাচন করে ফেলুন। 

RelatedPosts

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ?

গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কতটা নিরাপদ সে ব্যাপারে প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলার জানা অত্যন্ত জরুরী। কারণ অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং গর্ভের সন্তানের জন্য ছোটখাটো কিছু ভুল বড় ধরনের বিপদ বয়ে আনতে... Continue

সহবাসের সময় যোনি শুকিয়ে যায় কেন । ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস

সহবাসের সময় যোনি শুকিয়ে যায় কেন । ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস

আপনি কি জানেন সহবাসের সময় যোনি শুকিয়ে যায় কেন? সহবাসের সময় যোনি শুকিয়ে যাওয়ার মত ঘটনার মুখোমুখি আমরা অনেকেই হয়ে থাকি। সাধারণত মহিলাদের বয়স ৪৫ বছরের উপরে হলে... Continue

ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ই ক্যাপ ক্যাপসুল মূলত ভিটামিন ই মুখে খাওয়া হয় এবং প্রয়োজনে বাহ্যিকভাবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের তথ্য অনুযায়ী ই-ক্যাপ ক্যাপসুল এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। ভিটামিন ই... Continue

ফ্রি অনলাইন ডাক্তার পরামর্শ নিন

বাংলাদেশের সেরা অনলাইন ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে আমাদের এই পরিষেবার আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে আমাদের দেশের মানুষ হাসপাতালে কিংবা ব্যক্তিগত চিকিৎসাকেন্দ্রে গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতে পারেন না।... Continue

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলো

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি জেনে নিন | ১৪ টি প্রাথমিক লক্ষণ

পিরিয়ড মিস হওয়াই গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। তবে এটি ছাড়াও গর্ভাবস্থায় একজন নারীর অনেক ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় পিরিয়ড মিস হলে... Continue

ফেমিকন-এর-ছবি

ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, দাম ও উপকারিতা

ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে প্রত্যেক বিবাহিত মহিলা এবং পুরুষদের অবগত হওয়া উচিত। আমাদের দেশের প্রায় ৪০% বিবাহিত মহিলারা জীবনের কোন না কোন সময়ে ফেমিকন পিল সেবন করে থাকেন।... Continue