প্রতিদিন স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা
স্যলাইনের নাম শুনেনি এমন কাউকে সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে না। শরীরে পানিশূন্যতা হলে স্যালাইন খেতে হয় অথবা ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খেতে হয়। স্যালাইন কি শুধু এই দুইটা কাজেই লাগে? আর কি অন্য কোনো কাজে লাগে না? আপনারা বলতে পারেন যে, আর কোন কাজে স্যালাইন লাগবে? আসলে স্যালাইন শুধু এই দুইটা কাজেই লাগে না। স্যালাইন সম্পর্কে আমরা সবাই মোটামুটি জানি। কিন্তু আজকে আমরা স্যালাইন সম্পর্কে এমন কিছু জানবো, যেটা সাধারণ জনগণ এতোদিন তেমন জানতো না।
একবার ভেবে দেখুন তো, ডায়রিয়া বা পানিশূন্যতা হলে ডাক্তার তো বেশি করে পানি খেতে বলতে পারতো কিন্তু তা না বলে স্যালাইন খেতে বলে কেন? পানি খেয়ে কি এই পানি শূণ্যতা কমানো যেতো না? আসলে ডায়রিয়া হলে পানিশূন্যতার সাথে সাথে শরীরে লবণের বা সোডিয়ামের ঘাটতি দেখা যায়। এই লবণের বা সোডিয়াম আয়নের ঘাটতি পূরণ করার জন্য ও পানিশূন্যতা দূর করার জন্য স্যালাইন খেতে বলা হয়। আমাদের দেহে ওসমোরেগুলেশন এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে লবণ ও পানির ভারসাম্য বজায় থাকে। এখন কথা হলো, স্যালাইন কেন ৫০০ মি.লি. পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে হবে? এর থেকে কম পরিমাণ পানিতে যদি স্যালাইন মিশিয়ে খাই, তাহলে কী হবে? আপনি বলবেন যে, এর থেকে কম পরিমাণ পানিতে স্যালাইন মিশিয়ে খেলে কিছুই হবে না।
আরও পড়ুনঃ হৃদরোগ কি | হৃদরোগ হওয়ার কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার
স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা
যদি ৫০০ মিঃলিঃ এর কম পানিতে স্যালাইন মিশিয়ে খান, তাহলে আপনার শরীরে লবণ ও পানির ভারসাম্য ঠিকভাবে বজায় থাকবে না বরং ওসমোরেগুলেশন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ঝামেলা হবে। যারফলে উল্টো আপনার শরীর থেকে আরও পানি বের হয়ে যাবে, যেটা আপনার জন্য ক্ষতিকর হবে। এই কথা এতোদিন জানতেন না। কিন্তু এটা জানার পর আজকে থেকে আর ভুল করবেন না।
স্যালাইনের এসব ব্যবহার ছাড়া আর কী এমন ব্যবহার আছে? আমি বলবো যে, আছে। সেগুলো এবার দেখে নিন।
তাৎক্ষণিক শরীর দুর্বলতার ক্ষেত্রে গ্লুকোজ খেলে কাজ হয়। কিন্তু স্যালাইন খেলেও তাৎক্ষণিক দুর্বলতা অনেকটা দূর হয়। কারণ স্যালাইনে সোডিয়াম ক্লোরাইডের পাশাপাশি গ্লুকোজও থাকে।
আরও পড়ুনঃ সেক্সে রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা । জেনে নিন রসুন খাওয়ার নিয়ম
অনেকের লো প্রেশারের বা নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা থাকে। অনেক সময় তাদের রক্তচাপ স্বাভাবিক তুলনায় অনেক কমে যায়। এটা মূলত রক্তে সোডিয়াম আয়নের অভাবে হয় এবং এরফলে হার্ট বা হৃদপিণ্ড পাম্প করার পর্যাপ্ত শক্তি পায় না। এক্ষেত্রে স্যালাইন খেলে তাৎক্ষণিক ভাবে রক্তে সোডিয়াম আয়নের অভাব পূরণ হয় এবং রক্তচাপ স্বভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। কারোর যদি প্রেশার বা রক্তচাপ বেশি কমে যায়, তবে তাকে সাথে সাথে এক গ্লাস স্যালাইন খাইয়ে দিতে পারেন। এতে তাৎক্ষণিকভাবে উপকার পেতে পারেন।
খুব গরমে বা তীব্র রৌদ্রে কাজ করার পর স্যালাইন খেলে শরীরে লবণের অভাব পূরণ হয় এবং আপনি আবারও পুনরায় কাজ করার উদ্যোম পাবেন।
দীর্ঘ কয়েকদিন একনাগাড়ে কাজ করার পর অনেক সময় আপনার কিছুই ভালো লাগে না এবং কাজে মনযোগ বসাতে পারেন না। কোনো কোনো সময় শরীর হালকা দুর্বল লাগে। এক্ষেত্রে স্যালাইন খেলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ সর্দি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়
অতিরিক্ত কাজের চাপে বা টেনশনে থাকার কারণে অথবা দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে বাসায় আসার পর দেখা যায় যে, হালকা মাথা ব্যথা করছে। এক্ষেত্রে স্যালাইন খেলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে।
বিভিন্ন জার্নালে বলেছে যে, স্যালাইন পরিপাক নালী পরিস্কার রাখতে সাহায্য করে।
এবার তাহলে বুঝলেন যে, স্যালাইনের কত গুণাগুণ রয়েছে। হয়তো, সবাই এই সম্পর্কে আগে থেকে এতো কিছু জানতেন না বা কিছু বিষয় আজকে নতুন জানতে পারলেন।