নিয়মিত মাসিক না হওয়ার কারণ গুলো জেনে নিন

মাসিক না হওয়ার কারণ হিসেবে সাধারণত অনেকেই গর্ভধারণকে দায়ী করে থাকেন। কিন্তু গর্ভধারণ ছাড়াও এমন অনেক কারণ রয়েছে যেগুলো সঠিক সময়ে মাসিক হতে বাধা প্রদান করে। সাধারণত সাধারণত ২৮ থেকে ৩২ দিন পর পর মহিলাদের পিরিয়ড বা মাসিক হলে সেটি নিয়মিত মাসিক হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এই সময় অতিবাহিত হলে কিংবা সময়ের আগেই মাসিক হলে তা অনিয়মিত মাসিক হিসেবে গণ্য হবে।

Ask Question

নিয়মিত মাসিক না হওয়ার কারণ

এখন প্রশ্ন হল, নিয়মিত মাসিক না হলে করনীয় কি? নিয়মিত মাসিক না হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় কিশোরীদের মধ্যে। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগার কারণে এই হার আরো বেড়ে যায়। অনেকে মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম জানতে চান মাসিক নিয়মিত করণের জন্য। তাই আজকে আমরা জানবো কি কি কারনে অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে কিংবা মাসিক বন্ধ হয়ে যায় সেগুলো সম্পর্কে।

১। গর্ভধারণ

Honey Sponsored

সাধারণত গর্ভবতী হলে মহিলাদের মাসিক বন্ধ হয়ে যায়। দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ হিসেবে গর্ভধারণকে লিস্টের প্রথমে রাখা যায়। তাহলে মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে? উত্তর হলো, সব সময় থাকেনা। তবে দীর্ঘ সময় যদি মাসিক বন্ধ থাকে তবে অবশ্যই প্রেগনেন্সি টেস্ট করিয়ে নিন। 

২। হরমোন

অনেক সময় দেখা যায় যে বিশেষ কোনো কারণ ছাড়াই কিশোরী এবং মধ্যবয়সী নারীদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এর পেছনে প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে শরীরে হরমোনের পরিবর্তন। দীর্ঘ সময় ধরে এরকম চললে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

৩। ওজনের অসামঞ্জস্যতা

শরীরের ওজন যদি হঠাৎ করে প্রচুর পরিমাণে কমে যায় কিংবা অত্যন্ত বেড়ে যায় সে ক্ষেত্রে মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই শরীরের ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া কিংবা কমে যাওয়ার দিকে নজর রাখতে হবে। 

৪। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

যে সকল নারীরা নিয়মিত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে পিল গ্রহণ করেন তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বন্ধ হলেও পিল সেবন করা অব্যাহত রাখতে হবে। এরপরেও যদি মাসিক না হয় তবে বাদামি বর্ণের পিল সেবন করতে হবে। তাহলেই মাসিক হয়ে যাবে।

৫। পানির অভাব

শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকলে ইউরেটরে ইনফেকশন সৃষ্টি হয়। এই ইনফেকশনের ফলে অনেক সময় মাসিক হতে বিলম্ব হয়। সুতরাং নিয়মিতা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

৬। পুষ্টির অভাব

শরীরের রক্তশূন্যতা কিংবা ক্যালসিয়ামের অভাব হলে অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। তাই নিয়মিত সুষম খাবার গ্রহণের পাশাপাশি আয়রন জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। 

৭। আর্লি প্রেগনেন্সি লস

অনেক সময় গর্ভবতী হওয়ার পরেও মহিলারা বুঝতে পারেন না। এক্ষেত্রে নিজ থেকে গর্ভপাত হয়ে গেলে কিংবা ঔষধের সাহায্যে গর্ভপাত করালে মাসিক হতে বিলম্ব হয়। 

আরো পড়ুনঃ নিয়মিত মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়

৮। মানসিক চাপ

যে সকল মহিলারা সবসময় অতিরিক্ত মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করেন তাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিকের সমস্যার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তাই যতটা সম্ভব চাপমুক্ত থাকতে হবে।

৯। জরায়ুর টিউমার

অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ হিসেবে সাধারণ জরায়ুর টিউমার কেই দায়ী করা হয়। জরায়ুতে ফ্রাইবয়েডস নামক এক ধরনের টিউমার হয়। এই টিউমার দেখা দিলে পিরিয়ড এর স্বাভাবিক চক্র বাধাগ্রস্ত হতে পারে। 

১০। অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা

উপরের সমস্যাগুলোর পাশাপাশি ঠান্ডা কিংবা সর্দি কাশির মতো অশোকের কারণে পিরিয়ড লেট হতে পারে। তবে যাদের থাইরয়েডের সমস্যা কিংবা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রম এর মত সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক একটি নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। 

মহিলাদের নিয়মিত মাসিক না হওয়ার কারণ হিসেবে উপরের বিষয়গুলিকেই এখন পর্যন্ত দায়ী করা হয়ে থাকে। এগুলো ছাড়াও যদি অন্য কোন কারণে আপনার মাসিক না হয় তবে নিকটস্থের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মাসিক না হলে ঔষধ সেবন করুন। এছাড়াও আমাদের ফেসবুক গ্রুপে আপনার সমস্যাগুলো শেয়ার করতে পারেন। 

RelatedPosts

অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায়

অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায় কি?

অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায় কি সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না। মহিলাদের জন্য অনিয়মিত মাসিকের বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। আমাদের ওয়েবসাইটে মাসিক নিয়মিত করনের কিছু উপায়... Continue

মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়

মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়

প্রশ্ন হল মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় ? পিরিয়ড বা মাসিকের তারিখ পার হয়ে যাবার পর অনেকেই দুশ্চিন্তা করে থাকেন যে গর্ভবতী হয়ে পড়লেন... Continue

বিয়ের পর জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

বিয়ের পর জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ। প্রাকৃতিক ও চিকিৎসার মাধ্যমে।

বিয়ের পর জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ দাম্পত্য জীবনের অন্যতম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাড়ায়। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে বিশেষ করে নবদম্পতিরা দ্বিধাদ্বন্দের মধ্যে ভুগে থাকেন। কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে... Continue

মুখের ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায়

মুখের ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায়

মুখে ব্রণ বের হওয়াটা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। ত্বকের ঔজ্জ্বল্যতা এবং সৌন্দর্য সবকিছুকে নিমিষে নষ্ট করে দিতে ব্রণের বিকল্প নেই। আর তাই এই সমস্যাটা যখন দেখা দেয় তখন... Continue

বুকের দুধ বৃদ্ধির ট্যাবলেট এবং কিছু প্রাকৃতিক উপায়।

বুকের দুধ বৃদ্ধির ট্যাবলেট এবং কিছু প্রাকৃতিক উপায়।

মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধির ট্যাবলেট এর নাম জানতে চান অনেক মহিলারা। এর প্রধান কারণ হলো বাচ্চা হবার পর বাচ্চারা পর্যাপ্ত পরিমাণে বুকের দুধ পায়না। বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে... Continue

সহবাসের পর রক্তক্ষরণ কেন হয়

সহবাসের পর রক্তক্ষরণ কেন হয়

সহবাসের পর রক্তক্ষরণ কেন হয় এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে অনেকেই শুধুমাত্র রক্তকরণ বন্ধের ঔষধ সেবনকেই সমাধান হিসেবে দেখে থাকেন। কিন্তু জেনে রাখা উচিত যে সহবাসের পর রক্তক্ষরণ... Continue