আঁচিল কেন হয় | মুখের আঁচিল দূর করার উপায়
আজ আমরা মুখের আঁচিল দূর করার উপায় গুলো নিয়ে কথা বলব। ত্বকের জন্য বিব্রতকর একটি সমস্যা হল আঁচিল। যদিও এটি আমাদের শরীরের কোন ক্ষতি করে না তবুও যে জায়গায় আঁচিল বের হয় সেখানকার সৌন্দর্য একেবারে বিনষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া অনেক সময় এই ছোটখাট আঁচিল থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। আঁচিল কেন হয় এবং কিভাবে আঁচিল দূর করা যায় সে সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত জানব।
আঁচিল কি?
অনেক সময় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছোট দানার মত এক ধরনের বর্ধিত অংশ দেখা যায় যা আঁচিল নামে পরিচিত। বর্ণের দিক থেকে এটি অনেক সময় কালো কিংবা বাদামি হয়ে থাকে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে ছোট দানার মতো দেখতে এই আঁচিল অনেক বেশি বড় হয়ে যায়।
আঁচিল কেন হয়?
আমাদের শরীরে মেলানোসাইট নামক এক ধরনের কোষ রয়েছে যা ত্বকের বিভিন্ন বর্ণের জন্য কার্যকরী ভূমিকা। শারীরিক গঠন পরিবর্তন এবং আকার আকৃতি বৃদ্ধির সাথে সাথে এই কোষ সুষমভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু যদি কোন কারনে এই সুষম বৃদ্ধি ব্যাহত হয় তখন কিছু জায়গায় কোষের এই অতিরিক্ত অংশ গুটির মতো হয়ে দেখা দেয়। এভাবেই আঁচিলের সৃষ্টি হয়।
মুখের আঁচিল দূর করার উপায়
যদিও আঁচিল মানব দেহে ক্ষতিকর কোন প্রভাব ফেলে না কিন্তু সৌন্দর্য ব্যাহত করে বলে অনেকে এটি নিয়ে অনেকটাই বিব্রত হয়ে থাকেন। বিশেষ করে মুখের আঁচিল দূর করার উপায় অনেকে হন্য হয়ে খুঁজে বেড়ান। তবে যদি আপনার আঁচিল থেকে চুলকানি, আকৃতি বড় হয়ে যাওয়া, পুজ হওয়া, রক্ত বের হওয়া এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। মুখের আঁচিল দূর করার ক্রিম রয়েছে তবে তা নিজে নিজে ব্যবহার করা উচিৎ নয়। এছাড়াও নিম্নোক্ত উপায় গুলো অবলম্বন করে আপনি খুব সহজেই আঁচিল দূর করতে পারবেন।
রসুনঃ রসুনের একটি কোয়া ভালোভাবে ছিলে নিয়ে সেটি আঁচিলের ওপর চেপে কোন কিছু দিয়ে ব্যান্ডেজ করে রেখে দিন। এভাবে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা রেখে দিলে কিছুদিন পর আস্তে আস্তে আঁচিল দূর হবে।
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারঃ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করেও সহজে আঁচিল দূর করা যায়। প্রতিদিন অল্প একটু তুলোর সাথে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মেখে নিয়ে আঁচিলের ওপর এক ঘন্টা যাবত ব্যান্ডেজ করে রেখে দিন। এভাবে ১৫ দিন নিয়মিত ব্যবহার করলে আঁচিল দূর করা সম্ভব।
আরো পড়ুনঃ দ্রুত বীর্যপাত
কলার খোসাঃ উপরের উপায় গুলোর মতই কলার খোসার ভেতরের অংশ আঁচিলের ওপর চাপ দিয়ে রেখে দিন। এতে করেও আঁচিল দূর হয়।
আয়োডিনঃ ৫% আয়োডিন প্রতিদিন সকালে ও রাতে এক ফোঁটা করে আচিলে মেখে রেখে দিন। এভাবে সাত দিন নিয়মিত ব্যবহার করলে আঁচিল উঠে যাবে।
বেকিং সোডাঃ প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে এক চিমটি বেকিং সোডা নিয়ে তার সাথে কয়েক ফোঁটা কাস্টর অয়েল মিশিয়ে ভালোভাবে মেখে রেখে দিন।
আঙ্গুরের রসঃ প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার আঙ্গুরের রস নিয়ে আঁচিলের ওপরে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এভাবে এক মাস ব্যবহার করলে আঁচিল দূর হবে খুব সহজেই। তবে অন্যান্য উপায় গুলোর চেয়ে এটি অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ।
স্ট্রবেরিঃ আচিলে স্ট্রবেরি রস ব্যবহার করতে পারেন যা এটি নির্মূল করতে সহায়তা করবে।
এলোভেরাঃ হাতের কাছে যদি এলোভেরা থাকে তবে আঁচিল নিয়ে কোন চিন্তা নেই। অ্যালোভেরার পাতা কেটে নিয়ে তার ভেতরে থাকা জেলি আঁচিলের ওপর লাগিয়ে দিন। এভাবে কয়েকদিন ব্যবহার করলেই আঁচিল দূর হয়ে যাবে।
অস্ত্রোপচারঃ আপনি চাইলে উপরের ঘরোয়া উপায় গুলো অবলম্বন করে শরীরের যে কোন স্থান থেকে আঁচিল নির্মূল করতে পারবেন। তবে এগুলোর বাহিরে ও বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার বা সার্জারি করে আঁচিল নির্মূল করা সম্ভব।
সতর্কতা
আচল দেখতে শরীরের উচ্ছিষ্ট অংশের মতো হলেও এটি শরীরের সাথে অতপ্রত ভাবে সংযুক্ত। সুতরাং কখনোই আঁচলে খোঁটা খুঁটি করবেন না বা কেটে ফেলার চেষ্টা করবেন না। কেটে ফেললে আঁচিলের জায়গা থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তপাত হবে এবং পরবর্তীতে পুনরায় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ অনেকেই সেবন করে উপকৃত হয়ে থাকেন। তবে এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ। তাছাড়া উপরের উপায়গুলো অবলম্বন করে খুব সহজেই আঁচিল নির্মূল করতে পারবেন আপনার শরীর থেকে। তবে সন্দেহজনক কোন কিছু দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।