এলার্জির ঔষধ বেশি খেলে কি হয়?

এলার্জির ঔষধ বেশি খেলে কি হয়? এই প্রশ্নটিই অনেকটা অযৌক্তিক হলেও সময়ের সাথে সাথে যৌক্তিক হতে শুরু করেছে। এলার্জি হচ্ছে ইমিউন সিস্টেমের একটা দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা যা পরিবেশের কোনো এলার্জেনের কারণে শরীরে হাইপারসেনসিটিভিটি দেখায় কিংবা অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া দেখায়। যে কোন ওষুধের ওই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তার পাশাপাশি যদি কোন ঔষধ অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করা হয় তাহলে সেটা উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অ্যালার্জির হার ৩০% থেকে ৪০% বেড়ে গেছে। সাথে সাথে, অনেক বিশেষজ্ঞ দীর্ঘ সময়ের জন্য অ্যালার্জির ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করেন।

Ask Question

এলার্জি

 

Honey Sponsored

এলার্জির ঔষধ বেশি খেলে কি হয় ?

যে সকল ঔষধ এলার্জির জন্য ব্যবহৃত হয় সেগুলো হলো অ্যান্টিহিস্টামাইন, কর্টিকোস্টেরয়েড, মাস্ট সেল স্টেবিলাইজার, লিউকোট্রিন ইনহিবিটারস, অ্যালার্জেন ইমিউনোথেরাপি, এপিনেফ্রিন শট ইত্যাদি। তবে বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত এলার্জির একটি ঔষধ হলো মোনাস ১০ ট্যাবলেট। আমরা অনেক সময় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই একটু এলার্জির ভাব হলেই হাতের কাছে থাকা ট্যাবলেট পানি দিয়ে খেয়ে ফেলি। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া যেকোনো ধরনের ঔষধ সেবন করা যে কতটা বিপদজনক তা সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। 

 

সকল ধরনের এলার্জির ঔষধ যে সকল সমস্যার সৃষ্টি করে সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।

 

১। ঘুমের ভাবঃ এলার্জির ঔষধ খেলে এমনিতেই শরীরে হালকা ঘুমের ভাব এসে থাকে। কিন্তু এই ঔষধ যদি অধিক মাত্রায় সেবন করা হয় তাহলে সবসময় শরীরের ভেতরে একটা ঝিমুনি ভাব এসেই থাকবে। সব সময় মনে হবে যেন একটু ঘুমোতে পারলে শরীরের শান্তি পাওয়া যেত। কিন্তু যতোই ঘুমানো হোক না কেন শরীরের ঘুম আর শেষ হবে না।

 

২। শারীরিক দুর্বলতাঃ শারীরিক দুর্বলতা এলার্জির ঔষধ এর অন্যতম একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। যদি অধিকমাত্রায় এলার্জির ঔষধ সেবন করা হয় তাহলে শরীর আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে। আর শারীরিক দুর্বলতার কারণে ঔষধ সেবন কারী কোন কাজে মন বসাতে পারেন না। 

 

৩। খিটখিটে মেজাজঃ অত্যধিক এলার্জির ঔষধ খেলে শরীরের সহনশীলতা ক্রমেই হ্রাস পেতে থাকে। আর এতে করে মেজাজ খিটখিটে হতে শুরু করে। ছোটখাট ব্যাপার নিয়ে প্রচন্ড রাগ হয় এবং সবকিছুই কেমন যেন অসহ্য মনে হয়।

 

৪। অন্যান্য সমস্যাঃ ওপরে বর্ণিত সমস্যাগুলো ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য বা মূত্রত্যাগ কঠিন হয়ে যাওয়া, শরীরে শুষ্কতা অনুভব করা এবং ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া সমস্যাগুলো দেখা যেতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত বেশি পরিমাণে এলার্জির ঔষধ সেবন করা যাবে না। 

 

এলার্জির ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

স্বাভাবিক মাত্রায় এলার্জির ঔষধ সেবন করলে ও তিন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, অস্বাভাবিক পার্শপ্রতিক্রিয়া এবং বিরল পার্শপ্রতিক্রিয়া। সাধারণ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া এগুলোর মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা, ত্বকের বিরূপ প্রতিক্রিয়া, ডায়রিয়া, জ্বর, অসস্তি ইত্যাদি।

অস্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো হল রক্তক্ষরণ, খিঁচুনি, অস্বাভাবিক অনুভূতি, মাংসপেশির ব্যথা, অসুস্থতা বোধ, অস্বাভাবিক আচরণ, হতাশা, মাথা ঘোরা, তন্দ্রাচ্ছন্ন বা মুখের শুষ্কতা ইত্যাদি।

এর বিরল পার্শপ্রতিক্রিয়া গুলো হল লিভারের সমস্যা, স্মৃতিলোপ, বুক ধড়ফড় করা, হ্যালুসিনেশন, মনোযোগহীনতা, ফ্যাকাসে ভাব, আত্মহত্যার প্রবণতা ইত্যাদি।

এলার্জি প্রতিরোধের উপায়

এলার্জি যেহেতু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রক্ত সম্পর্কিত এক ধরনের রোগ হিসেবে এবং প্রায় স্থায়ী হিসেবে সবার কাছে পরিচিত সে ক্ষেত্রে এটি নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ করা সবচেয়ে উত্তম।

 এলার্জি প্রতিরোধে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। সেগুলোর মধ্যে এলার্জিজনিত খাবার যেমন বেগুন, গরুর মাংস, খাসির মাংস ও চিংড়ি মাছ এগুলো পরিহার করা। পাশাপাশি সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, নাক এবং মুখ ধুলা ও আবর্জনা থেকে দূরে রাখতে হবে। তবে হঠাৎ করে খুব বেশি এলার্জি উঠে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। 

 

এলার্জির ঔষধ সেবন করার পূর্বে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

RelatedPosts

হার্টের সমস্যা বোঝার উপায়

হার্টের সমস্যা বোঝার উপায় ও হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়

সাধারনত হৃৎপিন্ড, রক্তবাহী ধমনী ও শিরা, মস্তিষ্ক ও বৃক্ক সম্পর্কিত রোগকে হার্টের রোগ বলে। আপনি কোনো সমস্যা বোধ করছেন না, বুকে ব্যথা করে না কখনো, যেকোনো কাজ খুব... Continue

দিনে কতবার মিলন করা যায়

এক রাতে কতবার মিলন করা যায় | দিনে কতবার মিলন করা যায়

এক রাতে কতবার মিলন করা যায় বা দিনে কতবার মিলন করা যায় এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া অত্যন্ত কঠিন একটি ব্যাপার। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এখন পর্যন্ত এমন কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য... Continue

ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ই ক্যাপ ক্যাপসুল মূলত ভিটামিন ই মুখে খাওয়া হয় এবং প্রয়োজনে বাহ্যিকভাবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের তথ্য অনুযায়ী ই-ক্যাপ ক্যাপসুল এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। ভিটামিন ই... Continue

খাবার খাওয়ার পর পায়খানা হয় কেন

যেভাবে বুঝবেন হরমোনের সমস্যায় ভুগছেন কিনা

হরমোন মূলত আমাদের শারীরিক সকল কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কযুক্ত। শরীরের যদি কোন একটি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় কিংবা গ্রোথ ডেভেলপমেন্ট ঠিকমতো না হয় তবে বুঝতে হবে হরমোনের সমস্যা রয়েছে। যদিও... Continue

থাইরয়েড কি

থাইরয়েড কি? এর কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার। Thyroid in Bengali

অতি পরিচিত একটি গ্রন্থির নাম থাইরয়েড। গলার সামনের দিকে প্রজাপতি আকৃতির এই গ্রন্থিটি একটি মানুষের বৃদ্ধি, বিকাশ, শারীরবৃত্তীয় আর বিপাকীয় নানা ক্রিয়া-প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে থাকে। থাইরয়েড গ্রন্থির মিশ্রিত... Continue

খাবার খাওয়ার পর পায়খানা হয় কেন

মাথা ঘোরালে যা করবেন।

দ্রুত মাথা ঘোরা কমাতে পানি, স্যালাইন অথবা কচি ডাবের পানি পান করতে পারেন। মাথা ঘোরার সঙ্গে যদি বমি হয়ে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে... Continue