ট্রাইডোসিল ২৫০ মিঃ গ্রাঃ
ফার্মাকোলজি
ট্রাইডোসিল ২৫০ মিঃ গ্রাঃ ট্যাবলেট একটি এজালাইড অ্যান্টিবায়োটিক, যা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট রোগের সংক্রমণে নির্দেশিত হয়ে থাকে। এটি মানবদেহে গ্রাম-পজেটিভ ও গ্রাম-নেগেটিভ অনুজীবসমূহের বিরুদ্ধে কাজ করে। এটি সংবেদনশীল জীবাণুসমূহের রাইবোজোমের 50S নামক অংশে সংযুক্ত হয়ে জীবাণুর দেহে প্রোটিন তৈরীতে বাধা প্রদান করে থাকে, প্রোটিন সংশ্লেষ এবং কোষ বৃদ্ধি তে বাধা প্রদান করে।
ট্রাইডোসিল ২৫০ মিঃ গ্রাঃ ট্যাবলেট এর কাজ
অ্যাজিথ্রোমাইসিন ডিহাইড্রেট মূলত ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা মানবদেহে যে সকল রোগের সংক্রমণ হয়ে থাকে সেগুলোর এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে থাকে। এটি নিম্নে বর্ণিত রোগ গুলোর ক্ষেত্রে কাজ করেঃ-
- পুরুষ এবং মহিলাদের যৌনবাহিত রোগে
- নন-গনোকোকাল ইউরেথ্রাইটিস
- ব্রংকাইটিস ও নিউমোনিয়াসহ নিঃশ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ
- ত্বক ও কোমল কোষকলার সংক্রমণ
- মধ্যকর্ণের প্রদাহ
- সাইনুসাইটিস, ফ্যারিনজাইটিস ও টনসিলাইটিস সহ ঊর্ধ্বশ্বাসতন্ত্রীয় সংক্রমণে
- ক্ল্যামাইডিয়া ট্রাকোমাটিস জনিত জননাঙ্গের অজটিল সংক্রমণে এবং
- টাইফয়েড জ্বরেও নির্দেশিত হয়ে থাকে।
ট্রাইডোসিল ২৫০ মিঃ গ্রাঃ সেবনের নিয়ম
যেকোন ঔষধ সেবন করার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে অ্যাজিথ্রোমাইসিন সেবনের ক্ষেত্রে নিচের নির্দেশনা গুলো অনুসরণ করতে হবেঃ
- ৫০০ মিঃ গ্রাঃ দৈনিক একবার করে ৩ দিন পর্যন্ত অথবা প্রথম দিন ৫০০ মিঃ গ্রাঃ এবং পরবর্তীতে দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম দিন পর্যন্ত দৈনিক ২৫০ মিঃ গ্রাঃ করে ৪ দিন ।
- ক্ল্যামাইডিয়া ট্রাকোমাটিস জনিত যৌন রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে: ১ গ্রামের একক মাত্রা অথবা প্রথম দিন ৫০০ মিঃ গ্রাঃ ও পরবর্তী দুইদিন ২৫০ মিঃ গ্রাঃ করে সেবন করা উচিৎ।
শিশুদের ক্ষেত্রেঃ
- ৬ মাসের অধিক বয়সের বাচ্চার ক্ষেত্রে (যদি শারীরিক ওজন ১৫-২৫ কেজি হয়): দৈনিক ১০ মিঃ গ্রাঃ/কেজি হিসেবে ৩ দিন অথবা দৈনিক ২০০ মিঃ গ্রাঃ (১ চা-চামচপূর্ণ) করে ৩ দিন
- যদি শারীরিক ওজন ২৬-৩৫ কেজি হয়: দৈনিক ৩০০ মিঃ গ্রাঃ (১.৫ চা-চামচপূর্ণ) করে ৩ দিন
- যদি শারীরিক ওজন ৩৬-৪৫ কেজি হয়: দৈনিক ৪০০ মিঃ গ্রাঃ (২ চা-চামচপূর্ণ) করে ৩ দিন
- টাইফয়েড জ্বরের ক্ষেত্রে: দৈনিক ৫০০ মিঃ গ্রাঃ (২.৫ চা-চামচপূর্ণ), ৭-১০ দিন
সেবনবিধি
সাসপেনশন প্রস্তুত প্রণালী-
- ১ম ধাপ: প্রথমে পাউডার আলগা করার জন্য বোতলটি ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিন। অন্যথায় পাউডার গুলো দলা পাকিয়ে থাকবে এবং পানির সাথে ভালোভাবে মিশবে না।
- ২য় ধাপ: পানি ভালভাবে ফুটিয়ে নিয়ে ঠাণ্ডা করুন এবং বোতলের গায়ে নির্দেশিত পরিমাণ পানি পাউডারের সাথে মিশিয়ে নিন।
- ৩য় ধাপ: পাউডার পানির সাথে সম্পূর্ণ মিশে না যাওয়া পর্যন্ত বোতলটি ভালভাবে ঝাঁকিয়ে নিন।
- অ্যাজিথ্রোমাইসিন খাদ্য গ্রহণের ১ ঘন্টা পূর্বে অথবা ২ ঘন্টা পরে সেবন করতে হবে।
ট্রাইডোসিল ২৫০ মিঃ গ্রাঃ ট্যাবলেট এর দাম
প্রতিটি ট্রাইডোসিল ২৫০ মিঃ গ্রাঃ ট্যাবলেট এর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৫.০০ টাকা এবং ৬ টি ট্যাবলেটের বক্সের মূল্য ১৫০.০০ টাকা।
ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া
খাদ্য অথবা অ্যান্টাসিডের উপস্থিতিতে অ্যাজিথ্রোমাইসিনের শোষণ কমে যায়। আরগোট এলকালয়েড গ্রহণকারী রোগীদের ক্ষেত্রে একইসাথে এটা ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ অ্যাজিথ্রোমাইসিনের সাথে সাইটোক্রোম পি-৪৫০ এর বিক্রিয়ার ফলে আরগোটিজম দেখা দিতে পারে। তবে এন্টাসিড সেবন করার কমপক্ষে এক ঘন্টা আগে কিংবা এক ঘন্টা পরে অ্যাজিথ্রোমাইসিন সেবন করা যেতে পারে।
ম্যাক্রোলাইডসমূহ যেহেতু সাইক্লোস্পোরিন ও ডিজক্সিনের প্লাজমা মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, সেহেতু অ্যাজিথ্রোমাইসিনের সাথে এদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ওয়ারফারিন, থিওফাইলিন, কার্বামাজিপিন, মিথাইলপ্রেডনিসোলন ও সিমেটিডিনের সাথে অ্যাজিথ্রোমাইসিনের কোন মিথষ্ক্রিয়া নেই।
প্রতিনির্দেশনা
যদি কোন রোগীর অ্যাজিথ্র্রোমাইসিন বা অন্য কোন ম্যাক্রোলাইড এন্টিবায়োটিকের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা থাকলে অ্যাজিথ্রোমাইসিন সেবন করা উচিৎ হবেনা। যকৃতের রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রেও প্রতিনির্দেশিত।
ট্রাইডোসিল ২৫০ মিঃ গ্রাঃ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
ট্রাইডোসিল ২৫০ মিঃ গ্রাঃ সাধারণত একটি সহনীয় ঔষধ হিসেবে পরিচিত। তবে এর সাধারণ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেক সময় দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে রয়েছেঃ
- বমি-বমি ভাব
- বমি
- আন্ত্রিক ব্যথা
- উদরীয় অস্বস্তি
- বায়ু উদ্গিরণ
- ডায়রিয়া
- মাথা ব্যথা
- ঘুম ঘুম ভাব এবং
- ত্বকে র্যাশ বা ঘামাচি যা ঔষধ গ্রহণ বন্ধ করলে বন্ধ হয়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদানকালে
প্রেগন্যান্সি ক্যাটাগরী অনুযায়ী অ্যাজিথ্রোমাইসিন ‘B’ শ্রেণীভূক্ত ঔষধ। নিরীক্ষায় দেখা গেছে, অ্যাজিথ্রোমাইসিন এর Fetus এর উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব নেই। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহারে বিশেষ কোন তথ্য নেই। যেহেতু প্রাণিজ প্রজনন নিরীক্ষা এবং মানবদেহ পরিক্ষা সবসময় এক হয়না, সেহেতু এক্ষেত্রে কোন বিকল্প পাওয়া না গেলেই অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহার করা যেতে পারে। মাতৃদুগ্ধে অ্যাজিথ্রোমাইসিনের নিঃসরণ সংক্রান্ত কোন তথ্য জানা যায়নি। তবে, স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বিশেষ জনসংখ্যার ক্ষেত্রে ব্যবহার
কিডনি বৈকল্যের ক্ষেত্রে ব্যবহারঃ হালকা রেনাল প্রতিবন্ধকতা (ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স>40 মিলি/মিনিট) রোগীদের ক্ষেত্রে ডোজ সামঞ্জস্যের প্রয়োজন নেই, তবে আরও গুরুতর রেনাল বৈকল্যযুক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অ্যাজিথ্রোমাইসিন সম্পর্কিত কোনও তথ্য নেই; এইভাবে, এই রোগীদের মধ্যে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
হেপাটিক দুর্বলতায় ব্যবহারঃ যেহেতু লিভার হল অ্যাজিথ্রোমাইসিন নিঃসরণের প্রধান পথ, তাই এটি হেপাটিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত নয়।
মেশিন চালানো এবং ব্যবহার করার ক্ষমতার উপর প্রভাবঃ অ্যাজিথ্রোমাইসিন রোগীর গাড়ি চালানো বা যন্ত্রপাতি চালানোর ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন কোনও প্রমাণ নেই।
মাত্রাধিক্যতা
অ্যাজিথ্রোমাইসিন এর অতিমাত্রায় ব্যবহার সম্পর্কে বিষেষ কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ম্যাক্রোলাইড অ্যান্টিবায়োটিক অতিরিক্ত মাত্রার ব্যবহার করলে শ্রবণশক্তি হ্রাস, গুরুতর বমি বমি ভাব, বমি এবং ডায়রিয়া, দেখা দিতে পারে তবে কোন ঔষধ ই অতিরিক্ত সেবন করা উচিৎ নয়।
সতর্কতা
অসংবেদনশীল অণুজীবের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সতর্ক থাকুন এবং বৃক্কীয় বৈকল্যতার ক্ষেত্রে অ্যাজিথ্রোমাইসিন সতর্কতার সাথে সেবন করুন।
সংরক্ষণ
সকল ঔষধ আলো ও তাপ থেকে দূরে শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করুন।